• খড়গ্রামে তাঁত বাজারের দাবি রেশম শিল্পীদের
    বর্তমান | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কান্দি: পুজোয় মিলেছে প্রচুর বরাত। তাতে উৎসাহিত রেশম শিল্পীরা মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম ব্লকে সরকারি তাঁত বাজারের দাবিতে সরব হয়েছেন। স্থানীয় মহাজন নয়, সরাসরি বাইরের মহাজনের সঙ্গে লেনদেন করতেই শিল্পীদের এই দাবি। ওই ব্লকের কয়েক হাজার পরিবার তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত।

    খড়গ্রাম ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় পারুলিয়া, মাড়গ্রাম, ঝিল্লি, পদমকান্দি, এড়োয়ালি, ইন্দ্রাণী কীর্তিপুর পঞ্চায়েতগুলিতে হাজার হাজার পরিবার তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কেউ ঘরে বসে তাঁত বোনেন। অনেকে সুতো কাটা, গুটি রা পলু পোকার চাষ ও তুঁত  চাষের সঙ্গে যুক্ত। বাংলায় নবাবী আমল থেকেই এই এলাকায় তাঁত শিল্পের প্রচলন হয়েছিল।

    ব্লকের শিল্পীদের স্থানীয় মহাজনের কাছেই লেনদেন করতে হয়। সুতো কাটা হোক বা তাঁত বোনার কাজ, সব কিছুই স্থানীয় মহাজনের মাধ্যমে লেনদেন করতে হয়। সে ক্ষেত্রে শিল্পীরা লাভের মুখ খুব একটা দেখতে পান না বলেই দাবি। এলাকায় তাঁত বাজার হলে বাইরের মহাজনরাও আসবেন, কারবার বাড়বে। তাই অনেক বছর ধরেই শিল্পীরা তাঁত বাজারের দাবি জানিয়ে আসছেন।

    পদমকান্দি গ্রামের তাঁত শিল্পী হরেরাম মার্জিত বলেন, স্থানীয় মহাজন যে আমাদের ঠকিয়ে নেন তা নয়। তবে বাইরের মহাজনদের সঙ্গে কারবার করতে পারলে লাভের অঙ্ক বেড়ে যাবে। স্থানীয় মহাজন শাড়ি পিছু ৪০০ টাকা দিলেও একই গুণমানের শাড়ির জন্য সমুদ্রগড়ের মহাজনরা সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকেন।

    ঝিল্লি পঞ্চায়েতের কেলাই গ্রামের শিল্পী বংশী মার্জিত বলেন, বছর দুয়েক থেকে শুনছি প্রতিবেশী নবগ্রাম ব্লকে বিশ্বমানের রেশম হাব তৈরি হবে। এটা অবশ্যই ভালো। কিন্তু আমাদের দাবি, স্থানীয়ভাবে যদি এলাকায় তাঁত বাজার তৈরির। শিল্পীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় তাঁত বাজারের দাবিতে ইতিমধ্যে তাঁরা জেলা সেরিকালচার দপ্তর থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসন ও মহকুমা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। মাড়গ্রামের তাঁত শিল্পী বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, এবছর পুজোয় প্রচুর বরাত পাওয়া গিয়েছে। তবে পরিশ্রমের মাধ্যমেই লাভের অঙ্ক বাড়াতে হচ্ছে। তাঁত বাজারের দাবিতে আমাদের আন্দোলন বাম আমল থেকে। এলাকায় তাঁত বাজার হলে একদিকে আমরা যেমন সহজেই উৎপাদিত সামগ্রী বিক্রি করতে পারব। তেমনি সরাসরি বাইরের মহাজনের কাছে থেকে কেনাকাটাও করতে পারব। যদিও জেলা সেরিকালচার দপ্তরের এক অফিসার বলেন, খড়গ্রাম ব্লক এলাকায় তাঁত বাজার তৈরির খবর এখনও পর্যন্ত তাঁদের কাছে আসেনি। তবে ওই এলাকায় তাঁত বাজার তৈরি হলে হাজার হাজার শিল্পী উপকৃত হবেন।

    খড়গ্রাম বিধায়ক আশিস মার্জিত বলেন, বিধানসভায় প্রস্তাব তোলার সঙ্গে সম্প্রতি কলকাতার রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক সভাতেও খড়গ্রামে তাঁত বাজারের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। আমি আশাবাদী খড়গ্রামে তাঁত বাজার হবে। খোদ মূখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকী সরকারি খাসজমিও বাজারের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)