• সংসার সামলে মাশরুম উৎপাদন, মিলছে প্রশিক্ষণ, অনুদান
    বর্তমান | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: চা বাগানে কাজ করেন ওদলাবাড়ির অনিতা তিরকি। মালবাজারের সন্ধ্যা কেরকাট্টা বাড়িতে পালন করেন হাঁস-মুরগি। কুমলাইয়ের বড়দিঘির বুলবুলি ওরাওঁ চা শ্রমিক। ওঁরা প্রত্যেকেই শামিল হয়েছিলেন উদ্যানপালন দপ্তরের তরফে আয়োজিত মাশরুম প্রশিক্ষণ শিবিরে। হাতেকলমে শিখলেন সংসারের কাজ সামলে কীভাবে বাড়িতেই একেবারে নামমাত্র খরচে মাশরুম উৎপাদন করা যায়। দপ্তরের তরফে জানানো হল, মাশরুমের উপকারিতা। বাড়িতে রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি বাড়তি মাশরুম কোথায় বিক্রি করা যেতে পারে। মাশরুম উৎপাদন করে কত টাকা বাড়তি আয় হতে পারে। এটাও জানানো হল, কেউ যদি বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মাশরুম উৎপাদন করেন, তাহলে খরচ কত, সেক্ষেত্রে কত টাকা পর্যন্ত সরকারি অনুদান পেতে পারেন তিনি। সবটা শোনার পর খুশি অনিতা, সন্ধ্যা, বুলবুলিরা।

    জলপাইগুড়ির সহকারী উদ্যানপালন অধিকর্তা খুরশিদ আলম বলেন, জেলা প্রশাসন ও আমাদের দপ্তরের উদ্যোগে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের বিশেষ করে চা বলয়ে আর্থিক স্বনির্ভরতার দিশা দেখাতে মাশরুম উৎপাদনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে উন্নতমানের মাশরুমের বীজ।

    জলপাইগুড়ি তথা ডুয়ার্সের আবহাওয়া মাশরুম চাষের উপযোগী। বিশেষ করে ঝিনুক মাশরুম খুব ভালো হতে পারে এখানে। সেই সম্ভাবনাকেই তুলে ধরতে চা বলয়ের মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উদ্যানপালন আধিকারিকরা। তাঁদের বক্তব্য, ঝিনুক মাশরুম চাষের জন্য ২০-৩০ ডিগ্রি তাপমাত্রা এবং ৭০ শতাংশ আর্দ্রতা দরকার। জলপাইগুড়িতে তা আছে। তাছাড়া মাশরুম উৎপাদনের জন্য আমন ধানের খড় এখানে সহজলভ্য। ফলে মহিলারা নিজেদের বাড়িতেই মাশরুম উৎপাদন করতে পারেন। মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। ফলে মাছ-মাংসের বিকল্প হিসেবে খাওয়া যেতে পারে এটি। আবার ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য মাশরুম খুবই উপকারী।

    জেলার সহকারী উদ্যানপালন অধিকর্তা বলেন, ১ হাজার সিলিন্ডারে মাশরুম উৎপাদন করতে মোটামুটি সাড়ে ৬৬ হাজার টাকা খরচ হয়। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত আর্থিক অনুদান দিচ্ছে আমাদের দপ্তর। আমরা চাইছি, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা মাশরুম উৎপাদনে আরও বেশি করে এগিয়ে আসুন। এতে তাঁরা বাড়তি আয়ের দিশা দেখতে পাবেন।

    জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ির মোহিতনগরের পাশাপাশি ওদলাবাড়ি, বড়দিঘি, নাগরাকাটা, মাটিয়ালি, আংরাভাসা এলাকায় মাশরুম উৎপাদনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। সবমিলিয়ে আড়াইশো মহিলাকে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। আপাতত তাঁরা বাড়িতে খাওয়ার জন্য মাশরুম উৎপাদন করবেন। এজন্য তাঁদের বিনামূল্যে মাশরুমের বীজ দেওয়া হয়েছে। এবার যাঁরা বড় আকারে মাশরুম উৎপাদন করবেন, তাঁদের অনুদান দেওয়া হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)