এই সময়: আরজি করের ঘটনায় ন্যায় বিচার চেয়ে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের মতো কোচবিহারের মাথাভাঙাতেও পথে নেমেছিল জনতা। বিচারের দাবিতে রাস্তায় লেখা হচ্ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান। সেই কর্মসূচির তাল কাটল অচিরেই। প্রতিবাদীদের সরিয়ে দিয়ে জল ঢেলে মুছে ফেলা হলো স্লোগান-নির্যাতিতার প্রতীকী ছবি।এই ঘটনার প্রতিবাদ করে মার খেতে হলো প্রতিবাদীদেরই। কয়েকজন সামান্য জখমও হন। মাথাভাঙার ঘটনায় অভিযুক্তরা সকলেই তৃণমূলের সমর্থক বলে অভিযোগ। ছবি-স্লোগান মোছার অভিযোগ স্বীকারও করে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বুধবার রাতে মাথাভাঙা শহরের চৌপথীতে বিচার চেয়ে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ ও গণনাট্য সঙ্ঘের সদস্যেরা।
গানের সুরে, কবিতায় শিল্পীরা প্রতিবাদ জানান। কিছু চিত্রশিল্পী পিচ রাস্তার উপরে রং-তুলিতে তুলে ধরেন নারী নির্যাতনের কিছু ছবি৷ লেখা হয় ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’-সহ বিভিন্ন স্লোগান৷
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মকসেদুল ইসলামের অভিযোগ, ‘আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দিতে শুরু করে তৃণমূলের লোকজন। ওরা পাল্টা মিছিল করে শিল্পী ও দলের কর্মীদের হুমকি দেয়। তার পরে শিল্পীদের সরিয়ে রাস্তায় আঁকা ছবি সাদা রং দিয়ে মুছে দেওয়া হয়। প্রদ্যুৎ সাহা নামে সিপিএমের এক কর্মী প্রতিবাদ করলে তাঁকে মারধরও করা হয়৷’
মাথাভাঙা শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বজিৎ রায় মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘রাস্তায় প্রচুর মানুষ চলাচল করে। সেখানে কেউ নির্যাতিতার ছবি আঁকে! যাঁরা এই এটা করেছেন, তাঁরা আহাম্মকের কাজ করেছেন।’ যদিও তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ এই ঘটনার প্রতিবাদ করে বলেন, ‘আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করছি। যারা করেছে, পুলিশ ব্যবস্থা নিক। কেউ প্ররোচনায় কেউ পা দেবেন না। মা-বোনেদের প্রতিবাদ আমরাও সমর্থন করছি। তবে এটাও ঠিক যে, গোলমাল করে বাংলাকে অশান্ত করতে চায় বহু অপশক্তি। সকলকে বলব, সতর্ক থাকুন। তবে দলের কেউ এ সবে জড়ালে ছাড় পাবে না।’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুদারের অভিযোগ, ‘তৃণমূল সরকার এতটাই অপদার্থ হয়ে উঠেছে যে, তারা মানুষের প্রতিবাদের কথাটুকুও বলতে দিচ্ছে না।’ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘এ সব আসলে ফোঁস করা হচ্ছে, বাংলার মানুষ ফোঁসকে ভয় পায় না।’