• কেন এফআইআর করেনি কলেজ, প্রশ্ন হাইকোর্টের
    এই সময় | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: মুর্শিদাবাদের বেসরকারি ফার্মেসি কলেজের হস্টেলে ছাত্রের রহস্যমৃত্যুতে কেন কলেজের তরফে থানায় অভিযোগ জানানো হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনাতেও আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ কেন এফআইআর করলেন না, সেই প্রশ্নে সুপ্রিম কোর্টে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। সে ক্ষেত্রে আদালতের বক্তব্য ছিল, যে হেতু প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে, তাই কলেজ প্রতিষ্ঠান তার দায় এড়াতে পারে না।মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জ এলাকায় জাকির হোসেন ইনস্টিটিউট অফ ফার্মেসিতে তাহিত করিম নামে এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় গত ১৩ অগস্ট। সেই মৃত্যু ঘিরে খুনের অভিযোগ ওঠে। বিধায়ক জাকির হোসেন ওই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার। তাঁর হয়ে এই মামলায় আগামী দিনে এক সিনিয়র আইনজীবীর দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে এ দিন শুনানি স্থগিত রাখার আবেদন করেছিলেন জুনিয়র আইনজীবীরা।

    যদিও তা মানেনি বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ। আগের শুনানিতে নির্দেশের পরেও পুলিশ তদন্তের কেস ডায়েরি এবং রিপোর্ট না পেশ করায় বুধবার কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্ট।

    রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি ভরদ্বাজের বক্তব্য, ‘গুরুতর অভিযোগ। দ্বিতীয় বার ময়না তদন্তের আবেদন রয়েছে। যে সব প্রশ্ন উঠেছে, তা নিয়ে রাজ্য সঠিক জবাব দিতে না পারলে আদালতকে পদক্ষেপ করতে হবে।’

    আদালতের প্রশ্ন, ‘মৃতদেহের ইনকোয়েস্টের সময়ে কি ম্যাজিস্ট্রেট সামনে ছিলেন? কোন ম্যাজিস্ট্রেট? এগজ়িকিউটিভ, নাকি জুডিশিয়াল? এটা রাজ্য আগে স্পষ্ট করুক। তারপরে ময়না তদন্তের ক্ষেত্রে কী ভাবে পুলিশ এগিয়েছে, তা রাজ্য জানাক।’ আগামী শুক্রবার এই বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্য স্পষ্ট করে জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি ভরদ্বাজ।

    মৃতের পরিবারের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘১৪ অগস্ট মৃত্যুর ঘটনাটি সামনে আসে। স্থানীয় থানা অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। ১৭ অগস্ট ইংলিশবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। কলেজ কোনও এফআইআর করেনি। এখানেও সেই আরজি করের মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগ।’ রাজ্যকে বিচারপতির প্রশ্ন, ‘মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর কলেজ কী পদক্ষেপ করেছে? পুলিশ কখন জেনেছে? তারপরে কী করেছে?’

    কলেজের আইনজীবীর কাছে বিচারপতি জানতে চান, ‘কলেজ কেন কোনও এফআইআর করেনি?’ রাজ্যের আইনজীবীর যুক্তি, ‘১৩ অগস্ট রাতে পুলিশ খবর পায়। পুলিশ গিয়ে দেখে, দেহ মাটিতে শোওয়ানো আছে।’ বিচারপতি পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কে বা কারা ঝুলন্ত দেহ নামিয়েছে? তারপর কী করেছে পুলিশ? বাবার অভিযোগ কেন নেয়নি রঘুনাথগঞ্জ থানা?’
  • Link to this news (এই সময়)