ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: হুমকি, দুর্নীতি, লাগাতার বিক্ষোভের জের! বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে সদ্য কাকদ্বীপে বদলি হওয়া চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে সাসপেন্ড করল স্বাস্থ্যভবন। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে খবর। এর পরই স্বাস্থ্যভবন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, আপাতত বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে সাসপেন্ড করা হল। তিনি কোথাও কাজে যোগ দিতে পারবেন না পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত। সূত্রের খবর, সন্দীপ ঘোষ ঘনিষ্ঠ আরেক চিকিৎসক অভীক দে-কেও সাসপেন্ড করা হয়েছে।
ডা: বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের কাকদ্বীপ হাসপাতালে বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদিনই কাকদ্বীপ হাসপাতালের বাইরে সাধারণ মানুষ প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখান। বিকেল পাঁচটা থেকে ঘন্টা দুয়েক বিক্ষোভকারীরা হাসপাতাল সুপার কৃষ্ণেন্দু রায়কেও ঘেরাও করে রাখেন। কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু রায় জানান, বিক্ষোভে কোনওভাবেই হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। কিন্তু সন্ধেবেলা স্বাস্থ্যভবনের তরফে ডাক্তার বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের সাসপেনশনের নির্দেশ দেওয়ায় বিক্ষোভ উঠে যায়।
আর জি কর ঘটনার আবহে ভাইরাল ‘হুমকি’র অডিওকে কেন্দ্র করে চর্চায় এসেছিলেন বর্ধমান মেডিক্যালের প্যাথোলজি বিভাগের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। শোনা যাচ্ছিল, ৯ আগস্ট সকালে অর্থাৎ তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের দিন নাকি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সেমিনার হলে উপস্থিত ছিলেন বিরূপাক্ষ। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। শোনা যায়, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নাকি চলত তাঁর ‘দাদাগিরি’, ‘থ্রেট কালচার’।
একের পর এক বিতর্কে নাম জড়ানো বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বুধবার পদক্ষেপ করে স্বাস্থ্যদপ্তর। তাঁকে বদলি করে পাঠানো হয় কাকদ্বীপ হাসপাতালে। কিন্তু সন্দীপ-ঘনিষ্ঠ চিকিৎসককে হাসপাতালে কাজে যোগ দিতে বাধা দেন হাসপাতালের কর্মী, এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবারও দিনভর চলে বিক্ষোভ। এসবের জেরে এদিন স্বাস্থ্যভবন উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করে বিরূপাক্ষকে সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত নেয়। আর এই খবর পেয়েই কাকদ্বীপ হাসপাতাল থেকে বিক্ষোভ উঠে যায়।