• বধূকে কোপ মেরে আত্মহত্যা যুবকের
    বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে হাঁসুয়ার কোপ মারার অভিযোগ উঠল গ্রামেরই এক যুবকের বিরুদ্ধে। পরে রাতভর নিখোঁজ থাকার পর  গ্রামের একটি গাছে অভিযুক্তর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল। মৃতের নাম উৎপল মণ্ডল(৩৫)। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মল্লারপুর থানার আঁওদা গ্রামে। পুলিসের দাবি, লোকলজ্জার ভয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ওই যুবক।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঁচিশের ওই গূহবধূর স্বামী মল্লারপুরের একটি রাইস মিলে কাজ করেন। নিত্যদিন বাড়ি ফেরেন না। বুধবার রাতে দোতলা বাড়ির একটি ঘরে বছর তিনেকের ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন ওই বধূ। সদ্য নির্মিত হওয়ায় ঘরের দরজা ছিল না। বধূ বলেন, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ গ্রামেরই বাসিন্দা পেশায় ট্রাক্টর চালক ওই অবিবাহিত যুবক পাঁচিল টপকে সিঁড়ি বেয়ে উঠে ঘরে ঢোকে। তারপরই কুপ্রস্তাব দেয় ও জোরজবরদস্তি শুরু করে। বাধা দিলে আমার মাথায় হাঁসুয়া দিয়ে কোপ মারে। আমি চিৎকার করলে ওই যুবক সিঁড়ি দিয়ে নেমে পালানোর চেষ্টা করে। 

    নাত বউয়ের চিৎকার শুনে নীচের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা বছর সত্তরের ঠাকুমা শাশুড়ি সিঁড়ি দিয়ে উঠে যুবককে ধরার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, সেই সময় বৃদ্ধার গলাতেও হাঁসুয়া দিয়ে কোপ মারে। ওই অবস্থায় যুবককে ধরে রাখার চেষ্টা করেন বৃদ্ধা। যদিও দড়ি পেঁচিয়ে বৃদ্ধাকে উঠান পর্যন্ত ছেঁচড়ে নিয়ে এসে পালিয়ে যায় যুবক। রাতেই বধূর কাছ থেকে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে গ্রামে পুলিস আসে। জখম বধূ ও তাঁর ঠাকুমা শাশুড়িকে রামপুরহাট মেডিক্যালে পাঠায়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে সিসিইউতে রেখে চিকিৎসা চলছে। 

    রাতেই অভিযুক্ত উৎপলের খোঁজে তার বাড়িতে যায় পুলিস। যদিও তাকে না পেয়ে তার বাবা অষ্টকুমার মণ্ডলকে ধরে থানায় নিয়ে আসে। এরই মধ্যে এদিন সকালে গ্রামের একটি গাছে গলায় দড়ি জড়ানো অবস্থায় যুবককে ঝুলতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিস এসে দেহাটি নামিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য রামপুরহাট মেডিক্যালে পাঠায়। এরপরই সকালে যুবকের বাবাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতালের বেডে শুয়ে আক্রান্ত বধূ বলেন, উৎপল আমার ঘরে ঢুকে জোরজবরদস্তি শুরু করে। বাধা দিলে আমাকে হাঁসুয়ার কোপ মারে। আমার চিৎকার শুনে ঠাকুমা এলে তাঁকেও গলায় কোপ মারে। ঠাকুমার অবস্থা খুবই খারাপ। রাতেই বিষয়টি পুলিসকে জানিয়েছি। এখন শুনছি ওই যুবক নাকি আত্মহত্যা করেছে। 

    মৃত যুবকের বাবা বলেন, রাতে হঠাৎ পুলিস বাড়িতে এসে ঘুম থেকে তুলে থানায় নিয়ে আসে। সকালে ছেড়ে দেয়। কেন নিয়ে আসা হয়েছিল তা জানি না। ছেলে কেন আত্মহত্যা করল তাও বলতে পারব না। পুলিস জানিয়েছে, মহিলার সঙ্গে মৃত যুবকের কোনও সম্পর্ক ছিল কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। লজ্জায় আত্মঘাতী হয়েছে ওই যুবক। যদিও যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বধূ। তিনি বলেন, উৎপল আমার দূর সম্পর্কের ভাশুর হতো। ওকে সম্মান করতাম। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।     

     রামপুরহাট মেডিক্যালে মা জখম গৃহবধূ। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)