• মাথাভাঙা শহরে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় পুলিসের জালে তিন
    বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: বুধবার রাতে মাথাভাঙা শহরের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে এক যুবককে মারধরের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। ধৃতদের বৃহস্পতিবার মাথাভাঙা মহকুমা আদালতে তোলা হয়। মাথাভাঙা পুরসভার ওই কর্মীকে মারধরের কথা জানাজানি হতেই ব্যাপক আলোড়ন পড়ে শহরে। এদিক, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছে, প্রতিবাদীর রাজনৈতিক পরিচয় যাই থাকুক এ ধরনের হামলা দল সমর্থন করে না। যারা হামলা করেছে তারা দলের সমর্থক হলে দল তাদের কাজকে সমর্থন করবে না। শহর তৃণমূলের সভাপতি বিশ্বজিৎ রায়ের দাবি, প্রতিবাদীরা  চাইছিল ঝামেলা হোক, ওদের উস্কানিতেই এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। 

    এদিন দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করে মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিস সুপার সন্দীপ গড়াই বলেন, বুধবার রাতে প্রতিবাদ কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবেই হয়েছে। কর্মসূচি শেষলগ্নে শহরের এক বাসিন্দার সঙ্গে কয়েকজনের ঝামেলা হয়। এনিয়ে একটি অভিযোগ জমা পড়ে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও ধৃতদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি এএসপি। 

    অপরদিকে, বুধবার রাতে মারধর করার পর রাস্তার উপর আঁকা আলপনা মুছে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন শহরের শিল্পী, লেখক, সমাজসেবীরা। তাঁদের দাবি, শিল্পীর তৈরি কিছু পছন্দ না হলে তার পাল্টা শিল্প তুলে ধরুন, মুছে ফেলার সংস্কৃতি কখনই সমর্থন যোগ্য নয়। 

    এ ব্যাপারে তৃণমূলের মাথাভাঙা শহর সভাপতি বলেন, আর জি করের ঘটনায় নিয়ে সিপিএম, বিজেপি যেকেউ প্রতিবাদ করতেই পারে। এনিয়ে কোনও আপত্তি নেই কারও। কিন্তু, বুধবার রাতের ঘটনাকে আড়ালে রেখে মুখ্যমন্ত্রীর নামে কুৎসা ছড়ানো হচ্ছিল। এটা দেখে দলের কয়েকজন এক ব্যক্তির কাছে এর জবাব চায়। আমি নিজে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছি। দল এ ধরনের ঘটনা সমর্থন করে না। আন্দোলনের নামে সিপিএম কর্মীরা ঝামেলা তৈরির চেষ্টা করেছে। কয়েকজন সেই ফাঁদে পা দেন। 

    সিপিএম নেতা মহানন্দ সাহা বলেন, মাথাভাঙায় লেখক, শিল্পীদের উপর আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে মিছিলে যে হামলা সেটা কোনওভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। আমরা ঘটনার চরম নিন্দা করছি। মাথাভাঙার বিশিষ্ট সমাজসেবী তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, আমাদের শিল্প যদি পছন্দ না হয় পাল্টা শিল্প তুলে ধরা যেতে পারে মানুষের সামনে। যেভাবে বুধবার রাতে রাস্তার উপর তৈরি করা আলপনা মুছে যেওয়া হয়েছে, তা সমর্থন করা সুস্থ সংস্কৃতির মৃত্যুকে মেনে নেওয়া। এখানে দু’টি পক্ষ, একটি আর জি করের ঘটনার বিচার চাইছে, অপরপক্ষ বিরোধিতা করছে। যারা বিরোধিতা করছে তারাই রাতে হামলা চালিয়েছে। 

    যদিও গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনেরই জামিন হয় মাথাভাঙা মহকুমা আদালতে। এ ব্যাপারে আদালতের সরকারি আইনজীবী সুভাষ বর্মন বলেন, ধৃত তিনজনের বিরুদ্ধে জামিন যোগ্য ধারায় মামলা ছিল। জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারক।  মুছে দেওয়া হচ্ছে আলপনা। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)