মণ্ডপ সজ্জার বরাত না পেয়ে হতাশ ঊষাহরণের কাঠের মুখোশ শিল্পীরা
বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, গঙ্গারামপুর: মাসখানেক পর পুজো। অথচ মণ্ডপ সাজানোর জন্য এখনও কুশমণ্ডির ঊষাহরণের কাঠের মুখোশ ও বাঁশ শিল্পীরা বরাত পাননি। দিন যত এগচ্ছে, শিল্পী মহলে বাড়ছে হতাশা। কাজ পাওয়ার আশা ছেড়ে শিল্পীদের অনেকে এখন নিজের পেশা ছেড়ে রোজগারের পথ খুঁজছেন।
কুশমণ্ডি মহিষবাথান সমবায় সমিতির ঘরে পড়ে রয়েছে কাঠের তৈরি আধুনিক ডিজাইনের দুর্গা প্রতিমা। প্রতি বছর দুর্গোত্সবে কুশমণ্ডির মুখোশ ও ঊষাহরণের বাঁশ শিল্পীদের কাছে বরাত আসে দেশবিদেশ থেকে। বিগ বাজেটের পুজো উদ্যোক্তারাও এবার আর ডাকছেন না। শিল্পীদের একাংশের দাবি, আর জি করের ঘটনার পর আন্দোলনের জেরে পুজোর বাজার দিনদিন খারাপ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
প্রতিবছরে রাজ্যের বিগ বাজেটের অনেক পুজো মণ্ডপে কুশমণ্ডির কাঠের মুখোশ ও বাঁশের কাজ দেখা যেত। পুজো শুরু হওয়ার একমাস আগে থেকেই মহিষবাথান মুখোশ সমবায় ও ঊষাহরণ উড অ্যান্ড বাম্বু ক্র্যাফট সমবায় সমিতির শিল্পীরা মণ্ডপ সজ্জার কাজে চলে যেতেন উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। কাজ শেষ করে তাঁরা ফের বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে পুজোয় মেতে উঠতেন।
উষাহরণ উড বাম্বু ক্র্যাফট সমবায় সমিতির সম্পাদক বাঁশ শিল্পী গৌতম বৈশ্যর কথায়, এবারে রাজ্য ও জেলার কোনও পুজো মণ্ডপে কুশমণ্ডির ঐতিহ্যবাহী বাঁশের কাজ দেখা যাবে না। পরিবার নিয়ে পুজোর পাঁচ দিন আনন্দে কাটাতে এখন বাঁশের কুলো, ডালি, পাখা তৈরি করে জেলার বিভিন্ন হাটে বিক্রি করছি। এবারে আমাদের করুণ অবস্থা। অথচ আমাদের হাতের কাজ বিদেশেও গিয়েছে। কেন এমন হচ্ছে বুঝতে পারছি না।
পুজোর আগে টানা একমাস সুক্ষ্ম কাজ করে মুখোশ শিল্পীরা সাজিয়ে তুলতেন মণ্ডপ। সেই কাজের উপর নির্ভর করে পুজোর দিনগুলিতে হাসি ফোটে শিল্পীদের পরিবারে। এবার আদৌ বরাত পাবেন কি না, সন্দিহান শিল্পীরা। তাঁরা এখন রোজগারের অন্য রাস্তা খুঁজছেন।
কুশমণ্ডি মহিষবাথান মুখোশ সমবায় সমিতির সম্পাদক পরেশ সরকার বলেন, প্রতি বছর আমরা মহিষবাথান সমবায় সমিতির শিল্পীদের দিয়ে মণ্ডপ সজ্জার কাজ করতাম। শিল্পীরা একমাস আগে থেকে মণ্ডপ সজ্জার জন্য নানা ডিজাইনের মুখোশ তৈরি করতেন। রাজ্যের বিগ বাজেটের পুজো উদ্যোক্তারাও এখানে এসে কাজের বরাত দিয়ে যেতেন। এবার সমিতিতে মণ্ডপ সজ্জার কাজের একটাও বরাত নেই। পুজোর কাজ না পাওয়ায় অনেক শিল্পী এই পেশা ছেড়ে অন্য কাজে লেগেছেন। শিল্পীদের এখন একটাই লক্ষ্য, পুজোর ক’টা দিন পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে যে কোনও উপায়ে রোজগার করতে হবে।