• গঙ্গার গ্রাসে বাঁধের ৮০ মিটার, আতঙ্ক
    বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: ভূতনির পর গঙ্গাভাঙন গোপালপুরের কামালতিপুর গ্রামে। গঙ্গার জলস্তর কমতেই তিনদিন ধরে মালদহজুড়ে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে আতঙ্কে নদী তীরবর্তী এলাকার দুই শতাধিক পরিবার। তাঁরা অবশ্য জলমগ্ন এলাকা ছেড়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। তবে ভাঙন শুরু হওয়ায় দুশোরও বেশি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার মুখে। এমনটাই দাবি দুর্গতদের। ইতিমধ্যে নতুন করে মূল বাঁধের প্রায় ৮০ মিটার অংশ ভেঙে তলিয়ে গিয়েছে।

    ভাঙন রোধে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না করলে অবস্থা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে বলে দাবি এলাকাবাসীর। একে বহু এলাকা জলমগ্ন, তারওপর গঙ্গার পাড় ভাঙনে দিশাহারা অবস্থা দুর্গতদের। 

    গঙ্গার জল প্রতিদিন কমছে। বৃহস্পতিবার গঙ্গার জলস্তর কমে হয়েছে ২৪.৮৬ মিটার। তবে বিপদসীমার উপরই রয়েছে। জল কমায় বাড়ি ফেরার আশায় কিছুটা স্বস্তিতে ছিলেন গোপালপুরের দুর্গতরা। তারমধ্যেই গত দু’দিন ধরে  ভাঙন শুরু হওয়ায় চিন্তা বেড়েছে।

    বুধবার সন্ধ্যায় কামালতিপুরেও বোল্ডাল বাঁধের প্রায় ৪০ মিটার নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। এলাকার বাসিন্দারা আগেই বাড়িঘর ছেড়ে গোপালপুর হাইস্কুল সংলগ্ন আমবাগানে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন। জল কমলে ঘরে ফিরবেন তাঁরা। কিন্তু ততদিনে ঘর থাকবে কি না, সন্দেহ দুর্গতদের। তবে ভাঙনের জেরে নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার মুখে তাঁদের বাড়িঘর। এই পরিস্থিতিতে বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরাতে ব্যস্ত তাঁরা। 

    বাসিন্দারা বলছেন,এই মূল বাঁধ ভাঙলে গোপালপুর ও ধরমপুরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ শরিফুল বলেন, গনিখানের আমলে তৈরি বোল্ডারের বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গিয়েছে। জিনিসপত্র বাঁচাতে ঘর ভাঙতে শুরু করেছি। জিনিসপত্র নিয়ে কোথায় যাবেন? আপাতত ত্রাণ শিবিরেই থাকব। পরে কোথায় থাকব জানি না। 

    স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শেখ সাকিরুদ্দিন বলেন, কামালতিপুরের দুই শতাধিক পরিবারের অবস্থা খুবই শোচনীয়। বিষয়টি ব্লক প্রশাসন এবং বিধায়ককে জানিয়েছি। তাঁদের পুনর্বাসন যাতে হয়, তার আবেদন জানানো হয়েছে।

    এদিকে জলমগ্ন এলাকায় দুই মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়াল রাজ্য সরকার। বুধবার রাতে মানিকচক ব্লকে মৃত ভূতনির ছোটু চৌধুরী ও গোপালপুরের শেখ শাহেনশাহর পরিবারের হাতে দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিডিও অনুপ চক্রবর্তী, মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পিঙ্কি মণ্ডল প্রমুখ।

    মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী বলেন, ভাঙন রোধে কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন। এর প্রতিবাদে আমরা ফরাক্কা ব্যারেজ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসব। কেন্দ্রের কাছে আমাদের দাবি আদায় করে ভাঙন মোকাবিলার স্থায়ী কাজ হবে। যদি কেন্দ্র না করে তাহলে মুখ্যমন্ত্রীকে করতে আবেদন জানাব।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)