• অভয়া খুনের পরদিনই আর জি করে সংস্কারের নির্দেশিকা জারি
    বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘প্লেস অব অকারেন্স’ বা ঘটনাস্থল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের চেস্ট বিভাগের সেমিনার রুম। ঘটনার পরই সেই সেমিনার রুমেরই উল্টোদিকের ঘরে ভাঙচুর চালিয়ে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে শুধু অভিযোগ নয়, একবারে উচ্চ আদালতে মামলা হয়ে পৌঁছেছে। ৯ আগস্ট ভোরে খুন-ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে। অথচ তার পরের দিন ১০ আগস্টই আর জি কর’এ বৈঠক ডেকে ভাঙচুরের কাজ শুরু করার ব্যাপারে সিলমোহর আদায় করেন। এমনই অভিযোগ উঠেছিল তৎকালীন অধ্যক্ষ ডাঃ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। আর তারপরই শুরু হয়ে যায়  ভাঙাভাঙি। পূর্ত দপ্তরকে তিনি যে চিঠিটি পাঠিয়ে মেরামতি ও সংস্কার শুরু করতে বলেছেন, বৃহস্পতিবার সেটিই ভাইরাল হয়ে নেট দুনিয়ায় ঘুরতে থাকে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ১০ই আগস্ট পূর্ত দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারকে পাঠানো সেই চিঠিতে তিনি স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিকর্তার (শিক্ষা) সঙ্গে হাসপাতালের বোর্ড রুমে বৈঠকের উল্লেখ করেছেন। আর তাতেই বিতর্ক আরও বেড়েছে। চিঠির কপি স্বাস্থ্য দপ্তরের তিন শীর্ষকর্তা তথা সচিব ও দুই স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। পাঠানো হয়েছে পূর্তদপ্তরের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার এবং হাসপাতালের উপাধ্যক্ষকেও। চিঠিতে সন্দীপ জানিয়েছেন, হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ঘর এবং অ্যাটাচড বাথরুমের অভাব রয়েছে। হাসপাতালের রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে এ নিয়ে দরবার করা হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে পূর্তদপ্তরের কর্তাকে তিনি অবিলম্বে সব বিভাগে ডাক্তারদের ঘর এবং বাথরুম সংস্কার বা মেরামতির কাজ শুরুর করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, ঘটনাস্থলের অদূরেই ভাঙচুর শুরু করার অনুমতি বৈঠকে বসে কীভাবে দিলেন স্বাস্থ্যসচিব ও অধিকর্তা? প্রশ্ন উঠেছে। 

    আর জি করের ঘর ভাঙা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকর্তা (শিক্ষা) ডাঃ কৌস্তভ নায়েক বলেন, যেভাবে প্রচার হচ্ছে, তা রীতিমতো মানহানিকর। প্রথমত, ১০ আগস্টের বৈঠকে আর জি করের সমস্তস্তরের প্রতিনিধিত্ব ছিল। ছাত্রছাত্রীরাও ছিলেন। তাঁরাই বলেন ঘর এবং বাথরুমের অভাবের কথা। ছাত্রছাত্রীরা ঠিক করে দেন, কোথায় কোথায় ঘর-বাথরুম হবে। আর সেটা প্রচার হয়ে গেল, আমরাই নাকি ঠিক করে দিয়েছি, ঘটনাস্থলের পাশে বাথরুম বানিয়ে প্রমাণ লোপাট করে দেওয়ার! পাল্টা আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র  ডাক্তার অনিকেত মাহাতো বলেন, ১০ তারিখের বৈঠকে আমরাও উপস্থিত ছিলাম ঠিকই। আমরা সমস্ত বিভাগে ‘ডক্টরস রুম’ এবং পর্যাপ্ত বাথরুম তৈরি করার কথাও বলি। সেই মতো এক-দু’দিন পরে একটি তালিকা আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিই। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ কেনই বা শুধু চেস্ট বিভাগের সেমিনার রুমের পাশের ঘরে ভাঙচুর শুরু করল? যদি প্রকৃত সদিচ্ছা থাকত, তাহলে তো হাসপাতালজুড়ে সংস্কারের কাজ হতো।

    এদিকে বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থান মঞ্চে গিয়ে সিনিয়র চিকিৎসকরা শিক্ষক দিবসের শপথ নিয়েছেন। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পঠনপাঠনে উৎসাহ দেওয়া, নম্বর বাড়ানো কমানো বা ওই জাতীয় দুর্নীতিতে কোনওভাবেই কেউ অংশ নেবেন না, এহেন ১২টি শপথ নিয়েছেন চিকিৎসকরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)