• কাফে নিয়ে চুক্তি শর্তের নন রিফান্ডেবল ডিপোজিট সন্দীপ ফেরত পাইয়ে দিয়েছেন 
    বর্তমান | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি করে কফিশপ খোলার জন্য অফেরতযোগ্য এক লক্ষ টাকার ডিপোজিট রাখতে হয়। চুক্তি অমান্য করে এই টাকা নিয়ম ভেঙে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ তাঁর নিরাপত্তারক্ষী আফসার আলি খানের স্ত্রীর কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ফেরত পাঠান। কোনও রকম টেন্ডার ছা‌ড়াই আফসারের স্ত্রীর কোম্পানিকে কফিশপ খোলার সুযোগ করে দিয়েছিলেন সন্দীপ। আদালতে জমা দেওয়া রিমান্ড কপিতে এমনটাই দাবি করেছে সিবিআই। একইসঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী জরিমানা নেওয়ার কথা থাকলেও, তা না নিয়েই ওই কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ।

    আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে আফসারের সম্পর্ক কতটা গভীর, তা উদ্ধার হওয়া নথি থেকে জানতে পারছে সিবিআই। তদানীন্তন অধ্যক্ষের ঘরেই এই নিরাপত্তারক্ষী সব সময় বসে থাকতেন। সন্দীপের মতোই তাঁর দাপট ছিল হাসপাতাল চত্বরে। আফসার অনুমতি দিলেই তবে অধ্যাপক ও অন্য চিকিৎসকরা অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকতে পারতেন।  হাসপাতালের যাবতীয় কাজকর্মের বরাত সন্দীপ ঘোষ মারফত পেতেন স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে নিযুক্ত ওই  নিরাপত্তারক্ষী। পরিচিত সংস্থার মালিকদের নিয়ে আসতেন সন্দীপের কাছে। তাঁদের কমিশনের বিনিময়ে বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেন বলে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দাবি করেছে। এমনকী আফসার একাধিক কোম্পানি খুলেও আর জি করের বিভিন্ন টেন্ডার ধরতেন। খাতায় কলমে বিভিন্ন কোম্পানি টেন্ডারে অংশে নিয়েছে বলে দেখানো হলেও, আসলে সেগুলির মালিক ছিল একজনই। তাঁর স্নেহধন্য হওয়ায় অন্য সমস্ত কোম্পানির টেন্ডার বাতিল করে আফসারের স্ত্রীকে আর জি করে কফি শপ খোলার অনুমতি দিয়েছিলেন সন্দীপ। হাসপাতালের সঙ্গে হওয়া চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, নন রিফান্ডেবল ডিপোজিট হিসেবে এক লক্ষ টাকা জমা রাখতে হবে। অথচ কিছুদিন পরেই তা ফেরত পেয়ে যায় আফসারের স্ত্রীর কোম্পানি। সিবিআই অ্যাকাউন্টের নথি ঘাঁটতে গিয়ে দেখেছে, হাসপাতালে তহবিলে আসার পর তা আবার আফসারের স্ত্রীর কোম্পানির অ্যাকাইন্টে ক্রেডিট হয়েছে। কীভাবে সেটি হল, তার ব্যাখ্যা দিতে পারেননি হিসাবরক্ষক। তিনি জানান সন্দীপের কথামতোই সবটাই হয়েছে। এভাবে সরকারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, হাসপাতালে প্রতি বছর অডিট হয়। সেইসময় এটি ধরা পড়ল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এজেন্সি।  তদন্তকারীরা বলছেন, ক্যাফে সংক্রান্ত চুক্তির কপি স্বাস্থ্যভবনেও গিয়েছিল। হাসপাতালের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে আসা টাকা ঠিকমতো আছে কি না, তা তারা নিয়মিত পরীক্ষা করে। কিন্তু এহেন অসঙ্গতি কীভাবে তাদের নজর এড়িয়ে গেল, প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। একইসঙ্গে এই কাণ্ডে তিন চিকিৎসক তদন্তকারীদের নজরে রয়েছেন। অস্থায়ী কর্মী নিয়োগেও তাঁরা সন্দীপকে মদত দিতেন বলে অভিযোগ।
  • Link to this news (বর্তমান)