• সিবিআই ‘নীরব’ কেন, প্রশ্ন তুলে সরব তৃণমূল
    আনন্দবাজার | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • চিকিৎসক-ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সিবিআইয়ের ‘নীরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের দুই মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও শশী পাঁজার দাবি, অবিলম্বে এই নীরবতা ভেঙে ভয়ঙ্কর ওই অপরাধের তদন্তে তারা কতটা এগিয়েছে, তা প্রকাশ্যে আনা হোক।

    আর জি কর হাসপাতালের ঘটনায় বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রশ্ন ও প্রতিবাদ তো করছেই, নাগরিক সমাজও রাজ্য সরকারের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট। রাজ্যের দেওয়া সম্মাননা ফিরিয়ে দিয়ে চাপ তৈরি করেছেন বিশিষ্টদের একাংশ। এই রকম একটা পরিস্থিতিতে আর জি কর হাসপাতালের তদন্ত নিয়ে ফের সিবিআইয়ের উপরেই চাপ বাড়াতে চাইছে শাসক দল। বিশেষ করে, ধর্ষণ ও খুনের তথ্যপ্রমাণ লোপাটের যে সন্দেহ দানা বেঁধেছে, তা দূর করতে সিবিআই-কেই দেখিয়ে দিচ্ছে তারা। তৃণমূলের তরফে এক সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য বলেন, ‘‘কে, কোথায় তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছে, তা সিবিআই জানাক। কারা করল, কেন করল এবং তাদের কেন সামনে আনতে পারল না? তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার পরে ২৩ দিন কেটে গেলেও অগ্রগতি সম্পর্কে সিবিআইয়ের এই নীরবতাকে আমরা চ্যালেঞ্জ করছি!’’

    চিকিৎসকদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে বুধবার রাতেই প্রতিবাদে নেমেছিলেন নিহতের বাবা, মা ও পরিবারের লোকেরা। সেখানেই তাঁরা স্পষ্ট অভিযোগ করেন, মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পরেই পুলিশের পক্ষ থেকে টাকা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হতেই অন্য একটি ভিডিয়ো সামনে আসে, যেখানে ওই ছাত্রীর বাবা ও মা’কে বলতে শোনা গিয়েছে, এই রকম কোনও ঘটনা ঘটেনি। সেই ভিডিয়োটি দেখিয়েই এ দিন মন্ত্রী শশী বলেন, ‘‘সিবিআই একটা তদন্ত করছে, আমরা সবাই তার জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু তার মধ্যের সময়টাতে রাজনৈতিক দলগুলি ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ভুয়ো ভিডিয়ো ছড়িয়ে যাচ্ছে, অসত্য কথাও বলা হচ্ছে।’’ তাঁর অভিযোগ, কিছু রাজনৈতিক দল মৃত্যু নিয়ে ‘শকুনের রাজনীতি’ করছে। যদিও পরে নির্যাতিতার বাবা-মা অভিযোগ করেছেন, ওই পুরনো ভিডিয়োয় যা তাঁরা বলেছেন, তা তাঁদের ‘বলানো’ হয়েছিল। তাঁরা স্বেচ্ছায় বলেননি।

    এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুরু চাপানউতোরে এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধেছেন দুই তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন ও সাকেত গোখলে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু কেন্দ্রের পুরনো একটি চিঠি বার করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন তুলেছিলেন অপরাধের মামলার দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে। এর পরে ডেরেক, সাকেতদের দাবি, ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার ঝুলে থাকা মামলা এ রাজ্যে সব থেকে কম। তাঁদের হিসেব অনুযায়ী, বিজেপি-শাসিত গুজরাতে ৬ হাজার ৩৭১ ও উত্তর প্রদেশে ৮৫ হাজার ৫২৪ এই রকম মামলা ঝুলে রয়েছে। এ রাজ্যে সেই সংখ্যা তিন হাজার ৩০২টি। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। গুজরাতের স্থান ১৯ ও উত্তর প্রদেশের ২৫। এই খাতে সারা দেশের মধ্যে বাংলার জন্য সব থেকে কম অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)