ধীমান রায়, কাটোয়া: তখন রক্তক্ষরণে পোশাক ভিজে। কোনওরকমে টলতে টলতে বাড়িতে এসেই সাড়ে চারবছরের বাচ্চা মেয়েটা তার মাকে এসে বলল,”মা দাদুটা ভালো নয়। আমার সঙ্গে খারাপ কাজ করেছে। দাদুকে পুলিশে ধরিয়ে দাও।” এর পর মা মেয়েকে কাছে টেনে নিয়ে দেখতে পেলেন তাঁর শিশুকন্যার দুই পা বেয়ে অঝোরে রক্ত ঝড়ছে। পরিবারের লোকজন দেরি করেননি। সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে আসা হল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। আর জি কর কাণ্ডের মাঝেই এবার রাজ্যে আরও একটি নক্কারজনক ধর্ষণের ঘটনা ঘটল।
ভুট্টার লোভ দেখিয়ে ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে সাড়ে চার বছরের শিশুকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ। কাঠগড়ায় ৩৬ বছরের বিবাহিত যুবকের বিরুদ্ধে। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার ঘটনা। শুক্রবার সকালের দিকের ওই ঘটনার পর দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়নি শিশুটির। তাকে অপারেশন থিয়েটারে রেখে চিকিৎসা চলছে। কিছুটা সঙ্কটজনক অবস্থা বলে জানা গিয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে পুলিশ খবর পেয়েই অভিযুক্তের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, কাটোয়া থানার আলমপুর পঞ্চায়েত এলাকার একটি গ্রামে বাড়ি ওই শিশুটির। তার বাবা কলকাতায় একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করেন। বাড়িতে রয়েছেন দাদু, ঠাকুমা,মা এবং আড়াই বছরের ভাই। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম চরণ মাঝি। তার বাড়ি কাটোয়ার বিকেহাট। দুবার বিয়ে তার। নির্যাতিতাদের গ্রামেই দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকে চরণ। একই গ্রামে তাঁর দিদির বাড়ি। চরণ পঞ্চাননতলা হাইস্কুলের সামনে ঠেলা গাড়িতে ভুট্টা পুড়িয়ে বিক্রি করে। শিশুর মা জানান, চরণ তাদের গ্রামে বছরখানেক ধরেই রয়েছে। সেই সুবাদে শিশুটির পরিচিত। শিশুটি ‘দাদু’ বলত। এদিন সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ শিশুটি চরণের কাছে ভুট্টা কিনতে গিয়েছিল। তখন চরণ তাকে ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। চরণের স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। ওই বাড়িতেই একটি ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন।
অনেকক্ষণ ধরে মেয়ে ঘরে না ফেরায় তার মা ও দাদু যখন বাইরে বেরিয়ে খোঁজখবর নিতে যাচ্ছিলেন তখনই টলতে টলতে শিশুটি বাড়িতে ফিরছিল। শিশুটির ঠাকুমা মাঠে জনমজুরের কাজে গিয়েছিলেন। শিশুটির মা জিজ্ঞাসা করায় ঘটনার কথা জানায়। তখন রক্তে ভিজে গিয়েছে নিন্মাঙ্গের পোশাক। বমিও করছিল শিশুটি। তার দাদু পাড়াপড়শিদের জানান। তারপর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পাড়াপড়শিদের কয়েকজন অভিযুক্ত চরণের খোঁজখবর শুরু করেন। ততক্ষণে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায় সে। পুলিশও তার সন্ধান চালাচ্ছে।