• পুজোর আগে পদ্মচাষে লক্ষ্মীলাভের আশা
    বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য থমকে পদ্ম চাষ। এবার পদ্মফুল ফুটতে দেরি হওয়ায় মনসা পুজোয় তেমনভাবে দেখা মেলেনি পদ্মের। তবে দুর্গাপুজোর আগে বৃষ্টি না হলে জলাশয় ভরে ফুটবে পদ্মফুল। সেই পদ্ম বিক্রি করেই লাভের মুখ দেখবেন নবদ্বীপের পদ্মচাষি থেকে শুরু করে ফুল ব্যবসায়ীরা।

    নবদ্বীপ চরব্রহ্মনগর মাঝের পাড়ায় প্রায় চার বিঘা জলাশয়ে পদ্ম চাষ করেন নিখিল রায়। পদ্ম চাষ করেই প্রায় ২০ বছর ধরে জীবন জীবিকা সামলাচ্ছেন। শুধুমাত্র পৌষ এবং মাঘ মাস ছাড়া প্রায় সারা বছরই পদ্ম চাষ হয়। এখানকার পদ্ম নবদ্বীপ বাজার ও মায়াপুর ইসকন মন্দির ছাড়াও কৃষ্ণনগর, শান্তিপুর, নবদ্বীপ সহ পূর্ব বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যায়।

    নিখিল রায় জানান, এই চাষ করে মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা রোজগার করা যায়। পদ্মের কিছুই ফেলা যায় না। পদ্মফুলের পাশাপাশি চাহিদা আছে পদ্মপাতারও। পদ্মের চারাও চড়া দামে বিক্রি হয়। এছাড়া পদ্মফুল ফোটার পর বোঁটার কাছে একটা কুঁড়ির মতো অংশ থাকে আর সেখানেই সুপ্ত থাকে পদ্মের বীজ। সেই বীজ পেকে যাওয়ার পর তা দিয়ে তৈরি হয় শৌখিন মালাও। 

    পদ্ম চাষের প্রধান শত্রু কচুরিপানা। কচুরিপানা যাতে কোনওভাবেই জলাশয়ে না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হয়। কিছুদিন আগেও জলাশয়ে পদ্মফুল ফুটেছিল। কিন্তু অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে ফুল ফোটা থমকে যায়। 

    তবে এখন যেভাবে জলাশয় ভরে পদ্মের কুঁড়ি এসেছে, যদি মুষলধারে বৃষ্টি না হয় তবে জলাশয় ভরে উঠবে পদ্মফুলে। আর দুর্গাপুজোয় এই ফুল বেচেই ভালো লাভ হবে বলে আশা করছেন পদ্মচাষি থেকে ফুল ব্যবসায়ীরা। উল্লেখ্য,  গত বছর এক একটি পদ্মফুল ২২ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 

    স্থানীয় গৃহবধূ বিনা রায় বলেন, আমার শ্বশুরমশাই এই পদ্মের চাষ করেন  ফুল ফোটার পর জলাশয় থেকে ডিঙি নৌকা করে ফুল তুলে এনে দেন বাড়ির লোকজন। বহু পোকামাকড় থাকে এই পদ্মের জলাশয়ে। আমরা সেই ফুলগুলোকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করি। দূর দুরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা পদ্মফুল কিনে নিয়ে যান। তবে এবছর এই বৃষ্টির কারণে পদ্মফুল ফুটতে দেরি হচ্ছে।  

    স্থানীয় বাসিন্দা তথা নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তাপস বিশ্বাস (রানা) বলেন, এই এলাকায় বেশ কয়েকটি জলাশয়ে কমবেশি পদ্মের চাষ হয়। নিখিল রায় প্রায় ২০ বছরের বেশি এই চাষ করছেন। সারা বছরই কমবেশি পদ্মফুল পাওয়া যায়। বিশেষ করে দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো সময়ে এই ফুলের চাহিদা থাকে তুঙ্গে।
  • Link to this news (বর্তমান)