• থমকে মহিষাদল রাজবাড়ির সংস্কারের কাজ, পরিদর্শনে হেরিটেজ কমিশনের আধিকারিকরা
    বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: শুক্রবার মহিষাদলের ঐতিহ্যবাহী রঙ্গিবসান প্যালেসের থমকে থাকা সংস্কারের কাজ খতিয়ে দেখতে এলেন রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের পদস্থ আধিকারিক ও বিশেষজ্ঞরা। এদিন তাঁরা ওই প্যালেসের বিভিন্ন ঘর, সিঁড়িপথ, বারান্দা, ছাদ ঘুরে দেখেন। বিশেষজ্ঞরা মূলত প্যালেসের স্বাস্থ্য পরীক্ষার উপর জোর দেন। হেরিটেজ কমিশনের ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর রানা দেবদাস, ডেপুটি ডিরেক্টর শুভেন্দু মণ্ডল, কনসালটেন্ট আর্কিটেক্ট গোপা সেন এবং পিডব্লুডির এক ইঞ্জিনিয়ার। তাঁরা এ বিষয়ে নবান্নে হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রিপোর্ট দেবেন। হেরিটেজ কমিশনের পরিদর্শনের পর রঙ্গিবসান প্যালেস সংস্কারের থমকে যাওয়া কাজ ফের শুরু হবে বলে আশা করছেন মহিষাদলবাসী। সংস্কারের কাজ নতুন করে কাজ শুরুর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী। প্যালেস সংক্রান্ত রাজবাড়ির জমি জটিলতা কাটিয়ে কীভাবে হেরিটেজ সংরক্ষণ করা যায় সে বিষয়ে নবান্নে গিয়ে সম্প্রতি কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করেন বিধায়ক। পরে রাজবাড়ির প্রতিনিধি হরপ্রসাদ গর্গের সঙ্গেও চেয়ারম্যানের এ বিষয়ে আলোচনা হয়। সংস্কার শুরুর জন্য আবেদন করে বিধায়ক ও রাজবাড়ির ট্রাস্ট হেরিটেজ কমিশনকে গত ২২ আগস্ট চিঠি দেন। এরপরই এদিন কমিশনের তরফে বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখতে আসেন প্রতিনিধি দল। ২০১৫ সালের জুলাই মাস নাগাদ মহিষাদলে দু›শো বছরের বেশি প্রাচীন রঙ্গিবসান প্যালেস সংস্কারের জন্য ৬ কোটি ৩১ লক্ষ ৪৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে কেন্দ্রের সংস্কৃতি মন্ত্রক। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের তত্ত্বাবধানে রাজ্য পুরাতত্ত্ব বিভাগ ওই রাজবাড়ি সংরক্ষণের কাজ শুরু করে। ওই প্যালেসটি ১৮০৯ সাল নাগাদ মহিষাদলের রাজা জগন্নাথ গর্গ ও রানি ইন্দ্রাণীদেবীর সময়ে তৈরি হয়েছিল। ইউরোপীয় স্থাপত্যরীতির অনুসরণে তৈরি এই রাজবাড়ি। ওই রাজবাড়ি সংস্কার শুরুর পর দফায় কাজ বন্ধ হয়। দু›বার ঠিকাদার বদল হয়। করোনার ঠিক আগে টাকা না পেয়ে ঠিকাদার চলে যায়। বিধায়ক বলেন, ঠিকাদারদের কাজের ১ কোটি ২০ লক্ষ বকেয়া রয়েছে। তাঁরা টাকা না পেয়ে কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। কারণ জমি জটিলতার কারণে হেরিটেজ কমিশন ওই টাকা আটকে দেয়। তবে ওই টাকা কমিশনের কাছে জমা রয়েছে। জানা গিয়েছে, যে জমিতে ওই হেরিটেজ প্যালেস রয়েছে তা রাজাদের জমি। ওই প্যালেসও রাজাদের সম্পত্তি। ফলে ব্যক্তিগত জায়গায় কেন সরকারি অর্থ খরচ হবে তা নিয়ে অডিটে প্রশ্ন ওঠে। এরপরই কমিশন সংস্কারের টাকা আটকায়। পরে বিধায়কের উদ্যোগে রাজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর রফাসূত্র বের হয়। বিধায়কের দাবি, রাজ পরিবার আন্ডারটেকিং দিয়ে শর্তসাপেক্ষে ওই জমিতে হেরিটেজ সংস্কারের জন্য অনুমতি দিচ্ছেন। রাজবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে, শর্ত সাপেক্ষে রাজবাড়ির মদন গোপালজিউ ট্রাস্টের তরফে তাঁরা কমিশনকে সংস্কার শুরুর জন্য আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। বিধায়ক বলেন, প্যালেস সংস্কার হলে ওখানে হেরিটেজ হোটেল বা শিক্ষার জন্য ব্যবহৃত হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)