• ভীমপুরের বধূ খুনে জড়িত কি একাধিকজন? ‘মূল সূত্র’ ফোন
    বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: শুধুই কি আশুতোষ বিশ্বাস? নাকি ভীমপুরের গৃহবধূ খুনে জড়িত আরও অনেকে? সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে বধূকে খুনের ঘটনায় এই প্রশ্নই তদন্তকারী অফিসারদের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। কারণ, বধূর ফোন চেক করে আশুতোষ ছাড়াও আরও একাধিকজনের নম্বর পেয়েছে পুলিস। তাদের সঙ্গে বধূর কথাবার্তা হতো। তাই এই খুনের ঘটনায় তাদের কোনও যোগ রয়েছে কি না পুলিস খতিয়ে দেখছে। শুধু তাই নয়, আশুতোষ ও তার পরিবারের কথাতেও একাধিক অসঙ্গতি পেয়েছে পুলিস। খুনের ঘটনায় ধৃত আশুতোষকে শুক্রবার কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ছ’দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিনই ঘটনাস্থলে আসে ফরেন্সিক দল। ফরেন্সিক বিশেজ্ঞরা সেখান থেকে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করেছেন।

    প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে ভীমপুর থানার ডিগ্রি এলাকায় গৃহবধূ সাথী বিশ্বাসের(২৫) রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। সিঁদ কেটে ঘরের ভিতরে ঢুকে ভারী জিনিস দিয়ে মাথায় আঘাত করে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গৃহবধূ সাথীদেবী ও তাঁর স্বামী রামপ্রসাদ বিশ্বাস পাঁচ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসেন। তাঁরা ডিগ্রি এলাকায় রামপ্রসাদের মামারবাড়িতে ওঠেন। এরপর আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সহ বিভিন্ন নথিপত্র তৈরি করেন। দু’টি কাঁচা বাড়ি তৈরি করে গত তিন বছর ধরে তাঁরা থাকছিলেন। বৃহস্পতিবার সিঁদ কেটে বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূকে খুন করা হয়। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের বাড়ির পিছনে বড় জমি রয়েছে। সেখানে আশুতোষ চাষবাসের কাজ করত। সেই জমিতে শুভা বিশ্বাসকে কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল আশুতোষ। কোনও কিছু নিয়ে গণ্ডগোলের জেরে দিন পনেরো আগে আশুতোষ বিবস্ত্র অবস্থায় এসে শুভাদেবীর বাড়িতে ভাঙচুর করে। পাশাপাশি গৃহবধূ সাথীদেবীকে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে। তাই সে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে বধূর পরিবারের লোকজন সন্দেহ করেন।

    বধূর স্বামী কর্মসূত্রে শিলংয়ে থাকতেন। গত বুধবার রাতে বধূর শাশুড়ি ও ছেলে পাশের অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়েছিলেন। সকালে ফিরে এসে তাঁরা ঘরের মেঝেয় বধূকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পুলিসকে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি তদন্তে দাবিতে স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখান। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। বধূর ফোন ঘেঁটে বেশকিছু তথ্য পেয়েছে পুলিস। সেই সূত্র ধরেই পুলিস তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আশুতোষ ছাড়াও বধূর সঙ্গে আরও কয়েকজনের কথাবার্তা হতো। খুনের ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ রয়েছে কি না পুলিস খতিয়ে দেখছে। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, ‘ঘটনায় একাধিক ব্যক্তির জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সেই দিকটি খতিয়ে দেখছি। ফোনের রেকর্ড ধরেই তদন্ত এগচ্ছে। খুনের কারণ জানার চেষ্টা চলছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)