• ‘পুলিসি ঝক্কি’ এড়াতে কাটাই করে বিক্রি হতো চোরাই টোটো
    বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ডোমকল: চুরি করা আস্ত টোটো বিক্রি করা সমস্যার। রয়েছে পুলিসি ধরপাকড়ের ঝক্কি। ধরা পড়লেই সোজা গারদে। আবার অতবড় জিনিস লুকিয়ে পাচার করাও মুশকিল। তার থেকে ঢের সুবিধে তা কাটাই করে বিক্রি করলে। এতে অনেকটা পুলিসি ঝক্কিও এড়ানো যায়। থাকে না চোরাই টোটোর চিহ্নও। এতদিন ধরে রানিনগর ইসলামপুর সহ সীমান্তের থানা এলাকা থেকে চুরি করা টোটোগুলিকে এভাবেই কাটাই করে বিক্রি করা হতো। আস্ত টোটোকে কাটাই করে পার্টসগুলো খুলে বিক্রি করে দেওয়া হতো বিভিন্ন গ্যারেজে। টোটো চুরির তদন্ত নেমে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারির পর এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।

    প্রসঙ্গত, গত কয়েকমাসে রানিনগর, ইসলামপুর সহ সীমান্তের বেশ কয়েকটি থানা এলাকায় ঘনঘন চুরি যাচ্ছিল টোটো। বেশিরভাগ সময়েই টোটো লক করা থাকলেও চাবি ছাড়াই টোটো চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিল চোরেরা। থানাগুলিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের হতেই ময়দানে নামে পুলিস। সপ্তাহ দেড়েক আগে একটি টোটো চুরির ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে রানিনগরের রাস্তান শেখ নামের এক যুবককে পাকড়াও করে ইসলামপুর থানার পুলিস। এরপরে তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাতেই হয় পর্দাফাঁস। উদ্ধার হয় ইসলামপুর থানা এলাকায় চুরি যাওয়া ছ’টি টোটো। ইসলামপুরের পরে রানিনগর থানাও তাকে হেফাজতে নিয়ে দু’টি টোটো উদ্ধার করেছিল। এরপরে প্রকাশ্যে আসে সীমান্ত এলাকায় বেশিরভাগ টোটো চুরির নেপথ্যেই ছিল সে। রাস্তানের পাশপাশি সপ্তাহ দেড়েক আগে এক গ্যারেজ মালিককেও জালে তুলেছিল পুলিস। ওই গ্যারেজ মালিকই চুরির টোটোগুলিকে কাটাই করে যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে বিক্রি করত।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তান টোটোগুলিকে চুরি করে ডোমকলের কুপিলা দাশপাড়ায় একটি গ্যারেজে দিত। এরপরে ওই গ্যারেজে চোরাই টোটোকে কাটাই করা হতো। এরপরে টোটোর যন্ত্রাংশ আলাদা আলাদা করে খুলে নেওয়া হতো। শেষে যন্ত্রাংশ খুলে নেওয়া টোটোর কাঠামোকে কাটাই করে তা কেজি দরে ভাঙড়িতে বিক্রয় করে দেওয়া হতো।  প্রায় সপ্তাহ দেড়েক আগে ওই গ্যারেজের মালিক রনিকেও গ্রেপ্তার করেছিল ইসলামপুর থানার পুলিস। বর্তমানে সে জেল হেফাজতে রয়েছে। গ্যারেজ মালিক রনির টোটোর যন্ত্রাংশ সমন্ধে ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে। সে টোটোর যন্ত্রাংশ খুলে নিতে অভ্যস্ত। তবে শুধু রনি নয়, এই চুরি চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অন্যান্য গ্যারেজ মালিকও। তারাই কম দামে ওই পার্টসগুলি কিনত।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, আস্ত টোটো বিক্রি করাটা ঝক্কির। তার জন্যই দুষ্কৃতীরা কিছু ক্ষেত্রে চোরাই টোটোগুলিকে কাটাই করে পার্টস খুলে আলাদা করে বিক্রি করত। ইতিমধ্যেই তাদের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি যারা জড়িত এই চক্রে, তাদের খোঁজ করা হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)