• বাঁকুড়ায় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ছক, সতর্ক পুলিস
    বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: বাঁকুড়ায় বাড়ি ভাড়া দেওয়ার আগে মালিকদের একাংশ ভাড়াটিয়ার নথি যাচাই করছে না বলে অভিযোগ। বেশি টাকার লোভে মালিকরা ভাড়াটিয়ার অতীত না জেনেই বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেন। বাঁকুড়া শহর সহ খাতড়া, বিষ্ণুপুরের মতো জনবহুল থানা এলাকাগুলিতে এই প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। দু’দিন আগে আসানসোলে ধরা পড়া বিহারের কুখ্যাত দুষ্কৃতী নয়ন কুমার শিল্পাঞ্চলে ছাত্র সেজে বাড়ি ভাড়া নিয়ে বাঁকুড়ার একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ডাকাতির ছক কষে। সে ধরা পড়ার পর পুলিস আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না।     

    জেলা পুলিসের এক কর্তা বলেন, ভাড়াটিয়াদের নথি যাচাইয়ের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কারও গতিবিধি অস্বাভাবিক মনে হলে তৎক্ষণাৎ থানায় জানানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দা, বাড়ির মালিক ও এলাকার সিভিক ভলান্টিয়ারদের বলা হয়েছে। যাতে কেউ এজেলায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে অপরাধের ছক কষতে না পারে, তার জন্যই এই উদ্যোগ। ভাড়াটিয়াদের পরিচয়পত্র যাচাই করেই ভাড়া দেওয়ার জন্য বাড়ি মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও ঘটনা ঘটলে বাড়ি মালিকের বিরুদ্ধেও পুলিস আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। 

    তিনি আরও বলেন, বাড়ি ভাড়া দেওয়ার আগে ভাড়াটিয়ার পরিচয়পত্র দেখতে হবে। পরিচয়পত্রের জেরক্স কপি বাড়ির মালিকের কাছে রাখতে হবে। ভাড়াটিয়া সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। ভাড়াটিয়া কোন ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত সেব্যাপারেও খোঁজখবর রাখতে হবে। তারপর বাড়ি ভাড়া দেওয়া যাবে।

    অপরাধ কীভাবে সংগঠিত করা হবে, কীভাবে বা ঘটনার পর দ্রুত এলাকা ছাড়া যাবে, এসব পরিকল্পনার জন্য দুষ্কৃতীরা জেলাতেই বাড়ি ভাড়া নেয়।  রেকি করার জন্য কিছুদিন এলাকায় থাকা জরুরি। পাশাপাশি ‘বড় অপারেশন’ চালানোর আগে কিছুটা প্রস্তুতির প্রয়োজন হয়। তা সারতে বাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়। জেলা ও ব্লক সদর বা আশপাশের এলাকাকে তারা এরজন্য বেছে নেয়। গ্রামীণ এলাকার তুলনায় শহর এক্ষেত্রে দুষ্কৃতীদের কাছে পছন্দের জায়গা। গ্রামে মানুষ একে অপরের খোঁজ রাখে। কিন্তু, শহরের ব্যস্ত জীবনে পাশের বাড়ির খবর নিতে বাসিন্দারা সময় পায় না। ফলে শহরে বাড়ি ভাড়া নিলে দুষ্কৃতীদের সুবিধা হয়। তারা কিছুদিনের জন্য জেলায় থাকে। তারপর অপারেশন সেরে চম্পট দেয়। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্মাণ শ্রমিক বা ফেরিওয়ালার ছদ্মবেশে দুষ্কৃতীরা শহরে আশ্রয় নেয়। জিনিসপত্র ফেরি করার বাহানায় তারা নিজেদের লক্ষ্য পূরণে সচেষ্ট থাকে। অনেক সময় তারা ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে নেয়। তার আড়ালে আসল পরিচয় গোপন করে। ফলে ভাড়া দেওয়ার সময় বাড়ি মালিকদের এই বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে। বেশিরভাগ সময় দুষ্কৃতীরা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ভাড়া দেয়। বাড়ি মালিকরা যাতে টাকার জন্য সবকিছু ভুলে না যান সেব্যাপারেও পুলিস সতর্ক করেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)