• সাগর দত্তে ‘থ্রেট কালচার’, সরব অধ্যক্ষ থেকে চিকিৎসক পড়ুয়ারা
    বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুক্রবার নতুন করে কোনও অশান্তি ছড়ায়নি। তবে ঝামেলার আশঙ্কায় অধ্যক্ষের অফিসের বাইরে পর্যাপ্ত পুলিসি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার হামলার ঘটনায় জখম মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি) মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় শুক্রবার বিরূপাক্ষ বিশ্বাস গোষ্ঠীর ১৫জন চিকিৎসক পড়ুয়ার নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফেও এদিন কামারহাটি থানায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত চিকিৎসক পড়ুয়ারাও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন। এদিন ফের কলেজ কাউন্সিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জুনিয়র চিকিৎসকরা নিরাপত্তার দাবিতে সরব হন। কলেজের অধ্যক্ষও হাসপাতালের ‘থ্রেট কালচার’ ও দালালরাজ নিয়ে সরব হয়েছেন।

    ২০১১ সালে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের পথচলা শুরু হয়েছিল। সূত্রের খবর, ওই কলেজের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। সেখানে এখনও তাঁর যথেষ্ট দাপট রয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁর ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক পড়ুয়ারা আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। অধ্যক্ষের অফিসের দরজার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। এক চিকিৎসক পড়ুয়া জখম হন। আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসক আকাশ রায় এদিন বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ লবির থ্রেট কালচার গোটা বাংলায় চলছে। তার একটা বিশাল বড় নাম বিরূপাক্ষ বিশ্বাস, যে এই কলেজেরই ছাত্র ছিল। এই লবির একটা বড় অংশ এখনও সাগর দত্তে সক্রিয়। এদের দ্বারা অনেকে প্রতারিতও হয়েছেন। এসবের বিরুদ্ধে আমরা কলেজ কাউন্সিলের মিটিংয়ে আওয়াজ তুলতেই ওরা হামলা চালিয়েছে।’ কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান বলেন, ‘হামলার ঘটনায় আমরাও আতঙ্কিত। ২০২২ সালে আমি এই কলেজে এসে অভিযোগ পেয়েছিলাম, প্রাক্তন ছাত্র বিরূপাক্ষ বিশ্বাস কলেজ হস্টেলের দু’টি রুম বেআইনিভাবে দখল করে রেখেছে। ওই বছর ১৮ জুলাই অভিযোগ করার পর পুলিস তাকে গ্রেপ্তারও করেছিল। তারপরও চোরাগোপ্তা থ্রেট কালচার চালিয়ে গিয়েছে। পরীক্ষায় টুকলি ধরলে অধ্যাপকদের হুমকি, হেনস্তা ও রাস্তায় মারধরের হুঁশিয়ারি দেওয়া হতো। হাসপাতালের কর্মীদের হুমকি ও ঘেরাও করা হতো। আমার কাছে অভিযোগ এলে তা আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আমাদের অগোচরেও অনেক ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’হাসপাতালে দালালরাজ নিয়েও এদিন সরব হন অধ্যক্ষ। বলেন, ‘সিটি স্ক্যান ও এমআরই বিভাগে দালালরাজ চলত। স্থানীয় প্রভাবশালীদের মদতে অসাধু চক্র বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের এনে এখানে বিভিন্ন টেস্ট করিয়ে নিত। ফলে বছরে সরকারকে প্রায় দু’কোটি টাকা বিল দিতে হতো। এখন তা রুখে দেওয়ায় ওই বিল কমে ৩০-৪০ লক্ষ টাকা হয়েছে। তাই দু’বছর ধরে হুমকি ও হেনস্তা করা হচ্ছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)