• কারখানায় কর্মরত ৭ কর্মী, গোপালের চানাচুরের স্বাদে মজে গোটা সাগরদ্বীপ
    বর্তমান | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: তাঁর কারখানায় সাতজন কর্মী কাজ করেন। মাসে সাড়ে তিনশো কেজি চানাচুর তৈরি হয়। গোপাল মান্নার বানানো চানাচুরের চাহিদা এখন সাগরজুড়ে। সাত-সাতটি মেশিন ঘড়ঘড় করে সারাদিন চলে। দ্বীপের দোকানগুলি হামলে পড়ে কুইন্টাল মেপে চানাচুর কিনে নিয়ে যায়। কারখানা আর একটু বড় হলে আরও কয়েকজন কাজ পাবে, ভাবেন গোপাল। 

    লকডাউনে কাজ চলে গিয়েছিল। দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন সাগরের নাগেন্দ্রগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা গোপাল মান্না। স্ত্রী, মা বাবা ও দুই সন্তান রয়েছে বাড়িতে। তাঁদের খাবার সংস্থান করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। এক আত্মীয়ের কারখানায় কাজে ঢুকেছিলেন। কিন্তু বড্ড কম টাকা। সংসার চলছিল না। হঠাৎ রাজ্য সরকারের ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের বিষয়টি কানে আসে। এই প্রকল্পে আবেদন করে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে দিনমজুরের কাজ করতাম। তারপর ২০১৮ সাল নাগাদ কলকাতায় একটি চানাচুর কারখানায় কাজে ঢুকি। লকডাউনে কাজটা চলে যায়। সে কথা শুনে এক আত্মীয় পাথরপ্রতিমার গঙ্গাধরপুরে তাঁর কারখানায় কাজ দেন।’ তবে হাতে টাকা আসত কম। সংসার চলত না। তাই পাড়াপড়শিদের কাছ থেকে ভবিষ্যত ক্রেডিট কার্ড প্রকল্পের কথা জানতে পেরে ২০২৩ সালের ২৫ আগস্ট পাঁচ লক্ষ টাকার ঋণের জন্য আবেদন করে বসেন গোপাল। কয়েক মাস পর নথিপত্র যাচাই হয়। তারপর পাঁচ ডিসেম্বরের তিন লক্ষ ৯১ হাজার টাকার ঋণ মঞ্জুর করে ব্যাঙ্ক। ওই টাকা দিয়ে গোপাল কারখানা শুরু করেন। ছ’টি মেশিন কিনে ফেলেন। এবার কাজে আসে চানাচুর বানানোর অভিজ্ঞতা। প্রথমে অল্প পরিমাণ বানিয়ে স্থানীয়ভাবে বিক্রি করলেন। স্বাদ ভালো হয়েছিল বলে লোকের মুখে লেগে গেল চানাচুর। অচিরেই জনপ্রিয়। বানানোর পরিমাণ বাড়াতে শুরু করলেন। সাতজন কর্মী রাখলেন। এখন কারখানা রমরম করে চলছে। তাঁর বক্তব্য, ‘মাসে ৩৫০ কেজি চানাচুর অর্ডার আসে দ্বীপে। কাকদ্বীপে সাতটি দোকানে প্রতি সপ্তাহে গিয়ে এক কুইন্টাল করে সাত কুইন্টাল চানাচুর দিয়ে আসতে হয়। ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা না পেলে এ পর্যন্ত পৌঁছন যেত না। আগামী দিনে কারখানার আরও বিস্তার করতে হবে।’ -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)