• সিবিআইয়ের কৌঁসুলি কই? ধমক জজের, সঞ্জয় আরও ১৪ দিন জেলেই
    এই সময় | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়: আরজি কর হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনার মামলা শোনার জন্য অপেক্ষা করছেন বিচারক। আদালত কক্ষে রয়েছেন অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের আইনজীবীও। দেখা নেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের কৌঁসুলির! তিনি এলেন প্রায় ৪০ মিনিট পর। তাতে বেজায় চটে বিচারকের উক্তি, ‘তা হলে কি বেল দিয়ে দেব? অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।’গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে নিহত তরুণী চিকিৎসকের মামলায় কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করে টালা থানা। প্রথমে কলকাতা পুলিশ তদন্ত করলেও, হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। যদিও তার পরে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় আর কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। ইতিমধ্যে সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষা করিয়েছে সিবিআই। এ দিন জেল হেফাজত থেকে সঞ্জয়কে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করানো হয়েছিল। শিয়ালদহ কোর্টের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক পামেলা গুপ্তার এজলাসে শুনানি ছিল।

    বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ শুরু হয় দেশজুড়ে তোলপাড় ফেলে দেওয়া এই খুন এবং ধর্ষণের মামলা। এ দিন অভিযুক্তের আইনজীবী কবিতা সরকার সঞ্জয়ের পক্ষ সওয়াল করতে উঠে বলেন, ‘সিবিআইয়ের তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই। জামিন দেওয়া হোক মক্কেলকে।’ বিচারক জানতে চান, সিবিআইয়ের তরফে কে রয়েছেন?’ তখন এদিকে-ওদিক দেখতে থাকেন আদালতে উপস্থিত আইনজীবীদের একাংশ।

    ওই সময়ে সিবিআইয়ের এক সহকারী তদন্তকারী মহিলা অফিসার উঠে দাঁড়িয়ে বিচারককে বলেন, ‘আইনজীবী আসছেন। রাস্তায় আছেন।’ এর পর বিচারকের অনুমতি নিয়ে আদালত কক্ষের বাইরে গিয়ে তিনি ফোন করেন। এই ঘটনা দেখে সিবিআইয়ের পক্ষে ওই অফিসারের কিছু বলার অনুমোদন আছে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন কবিতা।

    এর পর ফের আদালতে ঢুকে বিচারকের উদ্দেশে ওই মহিলা অফিসার বলেন,‘একটু দেরি হচ্ছে। রাস্তায় আছেন।’ তাতেই অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন বিচারক। তিনি কার্যত ধমকের সুরে বলেন, ‘এটা সিবিআইয়ের চরম গাফিলতি। বিকেল ৪টে ৫৭ মিনিট। এখনও সরকারি আইনজীবী রাস্তায়! তা হলে আমি কী করব? বেল দিয়ে দেব? ইট ইজ় ভেরি আনফরচুনেট!’

    এ দিন ধৃতের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, তাঁর মক্কেল এই ঘটনায় যুক্ত নন। উচ্চ আদালতেও অভিযুক্তের কোনও জামিন মামলা আটকে নেই। কলকাতার বাসিন্দা, বহিরাগত নন। তাই তাকে জামিন দেওয়া হোক। বিচারকের ক্ষোভ প্রকাশের প্রায় ৪০ মিনিট পরে শিয়ালদহ আদালতে পৌঁছন সিবিআই-এর লিগাল সেলের কৌঁসুলি। দাবি করেন, তিনিই সরকারি পিপি। এর পর জামিনের বিরোধীতা করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের আবেদন করেন ওই আইনজীবী। সিবিআইয়ের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়ে ধমক দিলেও আদালত তা মঞ্জুর করে।
  • Link to this news (এই সময়)