• জনমত বুঝতে জেলায় অভিষেকের প্রতিনিধি
    আনন্দবাজার | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • জনসমর্থন কি ক্রমেই তৃণমূলের সরছে থেকে? আর জি কর আলোড়নের প্রেক্ষিতে সেই সুলুকসন্ধান শুরু করেছে তৃণমূল। দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের কার্যত মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিনিধি। জানতে চাওয়া হচ্ছে কেন তরুণ প্রজন্ম শাসকদলের থেকে সরে যাচ্ছে। যোগ্য নেতৃত্বের অভাব, নাকি পরিষেবা প্রদানে ঘাটতি থাকছে।

    ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি প্রসূন ষড়ঙ্গী মানছেন, ‘‘পরামর্শদাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা সাম্প্রতিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নিচ্ছেন।’’ ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান কবিতা ঘোষও বলছেন, ‘‘সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের এক প্রতিনিধি এসেছিলেন। সবার সঙ্গে আলাদা করে তিনি কথা বলেছেন।’’

    এ বার লোকসভার ভোটের ফলাফলের নিরিখে ঝাড়গ্রাম পুর-এলাকায় ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টিতে তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে। আর জি কর কাণ্ডে বিচার চেয়ে অরণ্যশহরের প্রতিবাদী মিছিলে সর্বসাধারণের ভিড়ও জোরদার হচ্ছে। বাড়ছে শাসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। এই আবহেই তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করেছেন অভিষেকের প্রতিনিধি এবং তৃণমূলের ভোট পরামর্শদাতা সংস্থার প্রতিনিধিরা।

    সূত্রের খবর, গত বুধবার শহরের এক বেসরকারি অতিথিশালায় ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের সব পুরপ্রতিনিধিকে ডাকা হয়েছিল। তৃণমূলের ১৭ জন পুরপ্রতিনিধির মধ্যে পুরপ্রধান কবিতা ঘোষ, উপপুরপ্রধান সুখী সরেন, শহর তৃণমূলের সভাপতি তথা পুরপ্রতিনিধি নবু গোয়ালা-সহ ১৬ জন উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন অভিষেকের প্রতিনিধি। ওই দিন পুরপ্রতিনিধি তথা যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি আর্য ঘোষ কলকাতায় রাজ্য নেতৃত্বের একটি বৈঠকে গিয়েছিলেন। তাই তিনি থাকতে পারেননি।

    জানা গিয়েছে, অভিষেকের প্রতিনিধি প্রত্যেক পুরপ্রতিনিধিকে আলাদা করে শহরে শাসকদলের ভোট কমার কারণ জানতে চান। পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান ও শহর সভাপতি কেমন কাজ করছেন তাও জানতে চান। ওই তিন জনের কাছেও আলাদা করে খারাপ ফলের কারণ জানতে চাওয়া হয়। সূত্রের খবর, অভিষেকের প্রতিনিধির প্রশ্নের জবাবে বেশিরভাগ পুরপ্রতিনিধি জানান, ২০২২ সালে পুরবোর্ড গঠিত হওয়ার পর এখনও শহরের অধিকাংশ রাস্তা বেহাল, উড়ালপুলের সার্ভিস রাস্তাও উপযুক্ত ভাবে করা যায়নি। পুর পরিষেবা নিয়েও মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে লোকসভার ফলে।

    একাংশ পুরপ্রতিনিধি অভিষেকের প্রতিনিধির কাছে পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান ও শহর সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। পুরপ্রধান ও শহর সভাপতি পদে কাদের যোগ্য মনে হয় তাও পুরপ্রতিনিধিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। শহরে আর জি কর নিয়ে আন্দোলনে কারা নেতৃত্বে দিচ্ছেন, সে ব্যাপারেও খোঁজ নিতে জেলায় হাজির হয়েছেন তৃণমূলের ভোট পরামর্শদাতা সংস্থার তিন প্রতিনিধি। এ প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডুর কটাক্ষ, ‘‘মানুষ আর তৃণমূলের সঙ্গে নেই। বিদায়বেলায় এখন আর কোনও সমীক্ষাই কাজে দেবে না।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)