আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। আর তারপর থেকেই জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে নাগরিক সমাজ এবং ছাত্রসমাজ রাজপথে নেমে আন্দোলন করছেন। স্লোগান উঠছে—‘উই ওযান্ট জাস্টিস’। সেখানে রাজভবনে মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ। আর সেই অভিযোগ ওঠে স্বয়ং রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে। সেদিন তাঁর হয়ে কাউকে আন্দোলনে নামতে দেখা যায়নি। নিজের লড়াই নিজেকে লড়তে হয়েছিল। এবার মুখ খুললেন সেই প্রাক্তন রাজভবনের মহিলা কর্মী। সেদিনও তিনি বিচার চেয়েছিলেন। তবে একাকী। এই কথা এবার তুলে ধরলেন নির্যাতিতা।
রাজভবনের সেদিনের ঘটনা রাজ্য–রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। তবে তা নিয়ে নাগরিক সমাজ এবং ছাত্র সমাজ কাউকে আন্দোলনে নামতে দেখা যায়নি বলে নির্যাতিতার অভিযোগ। কোনও সাহায্য তাঁকে করা হয়নি বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কেরলে চলে গিয়েছিলেন। তার কদিন পর ফিরে এসে তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন। নির্যাতিতা হেয়ার স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কলকাতা পুলিশ পাশে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু সাংবিধানিক পদে আছেন রাজ্যপাল। তাই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করা যায়নি। যার ফলে ক্ষুব্ধ রাজভবনে নির্যাতিতা প্রাক্তন কর্মী।
তবে এখন যে আন্দোলন চলছে তাঁকে সমর্থন করেছেন নির্যাতিতা প্রাক্তন রাজভবনের কর্মী। তরুণী চিকিৎসককে যেভাবে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তার প্রতিবাদ হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি। তবে তাঁর ক্ষেত্রে এমন কোনও আওয়াজ সমাজের বুকে ওঠেনি। এই বিষয়ে ওই নির্যাতিতা বলেন, ‘রাজ্যপাল যখন আমার শ্লীলতাহানি করেছিল তখন আমি এমন কোনও সাহায্য পায়নি। এমনকী একটা তদন্ত পর্যন্ত করা যায়নি। কারণ যেহেতু তিনি রাজ্যপাল।’ এই ঘটনার ভিডিয়ো ফুটেজ নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। যে ফুটেজ কলকাতা পুলিশ পেয়েছে এবং নবান্নে জমা দিয়েছে তার সঙ্গে রাজ্যপালের পোস্ট করা ভিডিয়ো’র মিল নেই বলে দাবি করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।
ওই ঘটনা নিয়েও জল অনেকদূর গড়িয়েছিল। রাজভবনে মহিলারা সুরক্ষিত নয় বলে অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার জন্য নবনির্বাচিত বিধায়ক হিসাবে মহিলাদের শপথ বিধানসভায় করার কথা বলা হয়েছিল। এমনকী যদি তাঁর কখনও প্রয়োজন পড়ে তিনি রাস্তায় দেখা করে নেবেন বলেছিলেন। রাজভবনে যাবেন না। ওই নির্যাতিতা মহিলার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার ওই নির্যাতিতার বক্তব্য, ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কথা বলেছিলেন রাজ্যপাল ওই ঘটনায়। কাউকে আওয়াজ তুলতে দেখা যায়নি জাস্টিস ফর রাজভবন বলে। কারণ আমি একজন চুক্তিভিত্তিক কর্মী ছিলাম। আর উনি রাজ্যপাল। তবে আমি খুশি এবার পরিস্থিতির বদল হয়েছে।’