• ড্রোন উড়িয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত পাকড়াও বর্ধমানের জঙ্গলে, ধৃতের পক্ষে সওয়ালে রাজি হলেন না কোনও আইনজীবী
    আনন্দবাজার | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • বছর চারের শিশুকন্যাকে ভুট্টা খাওয়ানোর নাম করে বাড়ি নিয়ে গিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত অবশেষে পাকড়াও হলেন পুলিশের হাতে। শনিবার ৪২ বছরের ওই অভিযুক্তকে বিকেহাট এলাকার জঙ্গল থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধর্ষণ-কাণ্ডের পর পালিয়ে যাওয়ার প্রায় ১৪ ঘণ্টা শেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন তিনি। শনিবারই অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করানো হয়। কিন্তু তাঁর পক্ষে কোনও আইনজীবীই সওয়াল করতে রাজি হননি।

    শুক্রবার কাটোয়ার একটি গ্রামে এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে প্রতিবেশী যুবকের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় বার বিয়ের পর নির্যাতিতাদের গ্রামেই একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন অভিযুক্ত। শুক্রবার সকালে ঠাকুরমার সঙ্গে রেশনের দোকানে গিয়েছিল শিশুটি। রেশন তুলে ঠাকুরমা মাঠে কাজে গিয়েছিলেন। সেই সময় শিশুটিকে ভুট্টা দেওয়ার নাম করে নিজের বাড়ি নিয়ে গিয়ে ওই যুবক ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। মেয়েটি রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি ফেরে। তার পর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সে। অন্য দিকে, এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই গা ঢাকা দেন অভিযুক্ত। অভিযোগ পেয়ে তাঁর খোঁজ শুরু করে পুলিশ।

    বিকেহাট জঙ্গলে অভিযুক্তের খোঁজে ড্রোন ওড়ায় পুলিশ। চলছিল ‘ড্রাগন লাইট’ হাতে খোঁজ। তার পরেই পাওয়া যায় অভিযুক্তকে। পূর্ব বর্ধমান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) রাহুল পাণ্ডে বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরেই অভিযুক্তকে ধরার জন্য পুলিশ বাহিনী তল্লাশি শুরু করেছিল। আশপাশের থানাগুলিতেও অভিযুক্তের বিবরণ জানিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়। পুলিশকর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ার মিলে প্রায় একশো জন অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছিল।’’ তিনি জানান, শুক্রবার গভীর রাতে অভিযুক্তকে গ্রেপতার করা হয়েছে। ধৃতের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অভিযুক্তকে খুঁজে বার করা এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘বেঁটে চেহারার কারণে ঘন ঝোপঝাড়ের মধ্যে অভিযুক্ত লুকিয়ে ছিল বলে সহজে ধরতে পারিনি। হিমসিম খেতে হচ্ছিল আমাদের। কার্যত চিরুনি তল্লাশির পর ধরা পড়েছেন অভিযুক্ত।’’

    শনিবার অভিযুক্তকে কাটোয়া মহকুমা আদালতের পক্সো এজলাসে হাজির করানোর পর দেখা যায়, তাঁর পক্ষে কোনও আইনজীবী সওয়াল করতে রাজি হচ্ছেন না। কাটোয়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সৌমেন সরকার বলেন, ‘‘ধৃতকে আজকের (শনিবার) জন্য কোনও রকম আইনি সাহায্য না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাটোয়া ল’ ক্লার্কস্ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও আইনজীবীরা এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানান।’’ শেষ পর্যন্ত ধৃতকে ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

    নির্যাতিত শিশুটি এখন চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। শিশুর মা এবং ঠাকুরমা বলেন, ‘‘যে একটা দুধের শিশুর সঙ্গে এমন জঘন্য কাজ করতে পারে, তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’ অভিযুক্তের কঠোর সাজার দাবি তুলেছে কাটোয়ার নাগরিক সমাজও।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)