বৃহস্পতিবার বিকেলে রেলের ঠিকাদার মুকেশ চাওলার ১কোটি ১ লক্ষ টাকা নিয়ে আসানসোল থেকে ১৯ নং জাতীয় সড়ক ধরে কলকাতায় যাচ্ছিলেন। দুর্গাপুরের পিয়ালা কালীমন্দিরের সামনে ব্যবসায়ীর গাড়ি ক্রাইম ব্রাঞ্চের পরিচয় দিয়ে টাকা লুট করে দুই পুলিস অফিসার-সহ ওই ৬ জন। তারপরেই দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রেলের ঠিকাদার মুকেশবাবু। আজ এদের আদালতে তোলা আদালত অসীম চক্রবর্তী, চন্দন চৌধুরী, মনোজ কুমার সিংহ, সুরজ কুমার রামের জেল হেফাজের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি মৃত্যুঞ্জয় সরকার ও সুভাষ শর্মার পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে মুকেশ চাওলার সঙ্গে ব্যবসা করবে বলে আলাপ জমায় দুর্গাপুর থানার এএসআই অসীম চক্রবর্তী, সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের এএসআই চন্দন চৌধুরী-সহ পুলিসের চাকরি থেকে বহিষ্কৃত অফিসার মৃত্যুঞ্জয় সরকার। ওই ব্যবসায়ী আসানসোলের সীতারামপুরে চলে আসেন নতুন 'পার্টনার'দের সাথে আলাপ করতে। ব্যবসার কথাবার্তাও পাকা হয়। এরপরই বৃহস্পতিবার সকালে মুকেশবাবু আসানসোল থেকে রেলের কলকাতা অফিসে ব্যবসার জন্যে টাকা জমা করতে ১ কোটি ১ লক্ষ টাকা নগদ নিয়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে রওনা দেন। তারই অফিসের কোনো কর্মীর মাধ্যমে এই খবর চলে যায় তাঁর নতুন অংশীদারদের কাছে। দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার ডিভিসি মোড়ের পিয়ালা কালী মন্দিরের কাছে প্রস্তুত হয়ে থাকে পুলিসের এএসআই, সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের কনষ্টেবল সহ পুলিসের সেই বরখাস্ত অফিসার-সহ আসানসোলের ৩ ব্যবসায়ী।
গাড়ি আসতেই গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে যায় ওই ৩ 'গুণধর' পুলিস সহ ৬ জন। নিজেদের ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ বলে গাড়ি রাস্তার পাশে নামাতে বলে। মুকেশবাবুকে ভয় দেখাতেই তিনি টাকা দিয়ে দেন। টাকা নিয়ে এলাকা ছাড়েন ৬ জন। সূত্রের খবর, টাকার ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিবাদ হওয়ায় ক্ষুব্ধ এক অভিযুক্ত মুকেশ চাওলা ও পুলিশকে খবর দিয়ে দেয়।
দুর্গাপুর থানার এএসআই অসীম চক্রবর্তী দীর্ঘদিন ধরেই আসানসোল দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটে কর্মরত রয়েছেন। এর আগেও কোকওভেন থানায় কর্মরত থাকাকালীন অপরাধমূলক একটি কাজে জড়িত থাকার ঘটনায় তাকে সতর্ক করা হয়। অন্যদিকে ধৃত সিআইডি বোম স্কোয়াডের কর্মী চন্দন চৌধুরী কয়েক বছর ধরে আসানসোল দুর্গাপুরে কর্মরত রয়েছেন। বরখাস্ত রাজ্য পুলিসের এইট ব্যাটেলিয়ানের কর্মী মৃত্যুঞ্জয় সরকার মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। পশ্চিম মেদিনীপুরে এইট ব্যাটেলিয়ানের কর্মী পদে নিযুক্ত থাকাকালীন নানান অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অপরাধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। ২০২২ সালে তাঁকে পুলিসের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিসের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান, " এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আছে তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে, আজ তাদের আদালতে হাজির করে পুলিসি হেফাজতের আবেদন জানানো হবে।"