• মাটিগাড়ায় ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনে দোষীর ফাঁসির নির্দেশ
    বর্তমান | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: আর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ চলছে। তরুণী চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি উঠেছে। এই আবহেই উত্তরবঙ্গে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় ফাঁসির সাজা দিল শিলিগুড়ি আদালত। মামলা রুজুর মাত্র এক বছরের মধ্যেই শনিবার পকসো কোর্টের বিচারক অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সেশন জাজ-১ অনীতা মেহেরোত্রা মাথুর এই সাজা ঘোষণা করেন। দোষীর নাম মহম্মদ আব্বাস। একইসঙ্গে নির্যাতিতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

    ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাটিগাড়ার মোটাজোতে খুন হয় একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রী। অভিযোগ, সাইকেলে চাপিয়ে ওই নাবালিকাকে অপহরণ করা হয়। ধর্ষণ করার পর নৃশংসভাবে তাকে খুন করা হয়েছিল। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন গ্রামবাসীরা। তদন্তে নেমে পুলিস অভিযুক্ত আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে। 

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, টানা শুনানি চলার পর গত বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মামলায় পুলিস, চিকিৎসক, স্থানীয় বাসিন্দা সহ ২২ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছিল। ময়নাতদন্ত, ফরেন্সিক, ডিএনএ টেস্ট রিপোর্ট সহ পুলিসের চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়। সেইসব খুঁটিয়ে দেখার পরই এদিন চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

    এদিন বেলা সাড়ে ৪টা নাগাদ দোষীকে আদালতে হাজির করা হয়। সরকার পক্ষের আইনজীবীও উপস্থিত হন। মামলার বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ছাত্রী হত্যার ঘটনায় চারটি ধারায় মামলা রুজু করেছিল পুলিস। দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিও জানানো হয়েছিল। সব শুনে ফাঁসির নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি পকসো আইন অনুসারে মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। 

    এদিন সকাল থেকেই উত্তেজনা ছিল কোর্ট চত্বরে। ছাত্রীর পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা সেখানে তাঁবু খাটিয়ে দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান। দার্জিলিং জেলার পাহাড় ও সমতলের মানুষরা তাতে শামিল হন। সাজা ঘোষণা হতেই তাঁরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। এক আত্মীয় বলেন, সকলের সহযোগিতায় ন্যায় বিচার মিলেছে। এই বিচার সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

    আর জি করের ঘটনার বিচার চেয়ে দেশ যখন উত্তাল, তখন একবছর আগে শিলিগুড়ির ছাত্রী হত্যা ও ধর্ষণের মামলার এই রায় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সরকার পক্ষের আইনজীবী বলেন, অনেক বাধার সম্মুখীন হলেও এই মামলায় মৃতের পরিবারকে একবছরের মধ্যে ন্যায় বিচার দিতে পেরেছি। একইভাবে আর জি কর কাণ্ড নিয়েও বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখতে হবে। এদিকে, অপর একটি ঘটনায় প্রতিবেশী নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে এক সেনা জওয়ানকে ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে জলপাইগুড়ির পকসো আদালত। 
  • Link to this news (বর্তমান)