• অভিযোগ তুলে নিতে কান্নাকাটি ‘দোর্দণ্ডপ্রতাপ’ সাহিন, সোহমের
    বর্তমান | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: তর্জন-গর্জনের দিন শেষ! ‘নেতার হুমকি’ বদলে গেল কান্নাকাটিতে। শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আন্দোলনকারী সেই জুনিয়র চিকিত্সকদের সামনে কার্যত নত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা চাইতে হল টিএমসিপি-র ডাক্তার নেতা সাহিন সরকার এবং সোহম মণ্ডলকে। সন্তানদের ‘ভবিষ্যত’ রক্ষায় কাকুতি মিনতি করতে দেখা গেল বাবা-মায়েদেরও। তদন্তকমিটির কাছে ‘মাফ চেয়ে’ ছেলেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নিতে অনুরোধ করেন তাঁরা।

    আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে চলা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আন্দোলন তুলতে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে এই দুই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে। সাহিনের বাড়ি মালদহে। সে মেডিক্যালে হাউসস্টাফ। সোহমের বাড়ি বড়জোরায়। সোহম উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্ন। পরীক্ষায় কারচুপি ও হুমকির অভিযোগে এই দুই ডাক্তার নেতাকে মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে এদিন কার্যত চুপিসারেই বাবা-মাকে নিয়ে সাতসকালে মেডিক্যালে উপস্থিত হন তাঁরা। 

    আন্দোলনকারীদের অন্যতম জুনিয়র ডাক্তার মেহেদি হাসান বলেন, এদিন বাবা-মা’র সঙ্গে এসে সাহিন সরকার  এবং সোহম মণ্ডল আমাদের কাছে কার্যত কান্নাকাটি করেছ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে। ওরা বলে, ভবিষ্যতে আর এরকম করবে না। কিন্তু এসব এখন গুরুত্বহীন। 

    এদিকে এদিন তদন্ত কমিটির সামনে অভিযোগকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বয়ানে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জুনিয়র বয়েজ হস্টেলের চারতলায় বরখাস্ত টিএমসিপি নেতা ডাঃ অভীক দে’ র জন্য একটা ঘর নির্দিষ্ট ছিল। সেই ঘরে সাধারণ ছাত্রদের থাকা নিষেধ ছিল। ‘দাদা’র জন্য হস্টেল রুমে এসি মেশিন বসানো ছিল। এতে প্রশ্ন উঠেছে, কলেজ হস্টেলে একটি মাত্র ঘরে এসি বসানোর অনুমোদন দিয়েছিল কে? এক অভিযোগকারী বলেন, অভীক দে কলেজে আসলে ছাত্রদের উপর নানারকমের ফতোয়া জারি হতো। আমরা তটস্থ থাকতাম। 

    এদিন তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক বলেন, তদন্ত কমিটিতে সব মিলিয়ে ৫০ জন হাজির হয়েছিলেন। অভিযুক্ত সাহিন সরকার এবং সোহম মণ্ডলও কমিটির মুখোমুখি হয়। সকলেরই অভিযোগ, সাহিন এবং সোহমের বিরুদ্ধে।  ওদের বিরুদ্ধে সকলেই পরীক্ষায় বসা নিয়ে হুমকি, কলেজের অনুষ্ঠানের জন্য মোটা চাঁদার জন্য জুলুমবাজির অভিযোগ করেছে। হস্টেলে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগও করেছে। অভিযুক্তরাও স্বীকার করেছে, তারা প্রভাবশালী টিএমসিপি নেতাদের চাপে এসব করতেন। তবে সদ্য-প্রাক্তন ডিন ডাঃ সন্দীপ সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে কেউ এদিন সরাসরি অভিযোগ করেনি। 

    আগামী সোমবার তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রিন্সিপালের হাতে তুলে দেবে। সেদিন দুপুরে কলেজ কাউন্সিলের মিটিং রয়েছে। ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক বলেন, সেখানে এই রিপোর্ট পেশ করবেন প্রিন্সিপাল।  মেডিক্যালের প্রিন্সিপালের ঘরের সামনে ফ্লেক্স। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)