পরিস্রুত পানীয় জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে বাড়তি জোর উত্তর ২৪ পরগনায়
বর্তমান | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: আগামী সোমবার সমস্ত দপ্তরকে নিয়ে বৈঠক করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে মূলত বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পে জোর দেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এ নিয়ে তৎপর হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। সেইমতো কাজও শুরু হয়েছে।
২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর এই প্রথম রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে সমস্ত দপ্তরের সচিব ও মন্ত্রীদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি আর জি কর আবহে পুলিস কর্তাদেরও উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলায় জেলায় উন্নয়নের কী অবস্থা, তা নিয়ে পর্যালোচনা হবে বলে জানা যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে সবকটি জেলার জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সেখানে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছনোর বিষয় নিয়ে জানতে চান তিনি। সেই বৈঠকের ক’দিন পরেই মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে এই ইস্যু উঠতে পারে, তা ধরে নিয়েই এগচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। কারণ, এই জেলায় সব থেকে বড় ইস্যু হল পানীয় জল। রাজ্য সরকার ‘জল জীবন মিশন’ প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। সেই মতো উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ১৪ লক্ষ ৩৪ হাজার ৫০২টি পরিবারে পরিশুদ্ধ পানীয় জল পাইপলাইনের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তারমধ্যে ইতিমধ্যেই ৯ লক্ষ ২০ হাজার ৮৬৪ পরিবারে তা পৌঁছেছে। কিছু কিছু জায়গায় ছোটখাট সমস্যার কারণে কাজ থমকে রয়েছে। তথ্য বলছে, ৬৪ শতাংশের বেশি পরিবারে পানীয় জল পৌঁছে গিয়েছে। এদিকে, প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, রাজ্যে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ ২৪ হাজার ৬১১টি পরিবারে পানীয় জল পাইপলাইনের মাধ্যমে পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। ৯১ লক্ষ ৬০ হাজার ৬০১টি পরিবারে তা পৌঁছে গিয়েছে। এক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে নদীয়া জেলা। ৮৫ শতাংশের বেশি কাজ করে ফেলেছে ওই জেলা। উত্তর ২৪ পরগনা রয়েছে চতুর্থ স্থানে। উন্নয়ন নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকের আগে জেলায় প্রকল্পের কাজ শেষ করার ব্যাপারে তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমায় কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা রয়েছে, তা মেটানোর চেষ্টা চলছে।
এনিয়ে জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, এই কাজের জন্য রয়েছে দু’টি পদ্ধতি। প্রথমত, জল উত্তোলন করে তা পরিস্রুত করা। দ্বিতীয়ত, পাইপের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া। আশা করছি, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব। অন্যদিকে, জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী বলেন, জেলায় পানীয় জলে আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে। তাই এই কাজে বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে। এটা সময় সাপেক্ষ কাজ। রিজার্ভার বা জলাধার তৈরির জন্য জায়গা নিয়ে কিছু সমস্যা ছিল। তবে আমরা তা মিটিয়েছি।