রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন জহর সরকার। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে তাঁর এই সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে সাংসদ পদ ছাড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন জহর সরকার। আগামী সপ্তাহে দিল্লিতে গিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেবেন এই সাংসদ, সূত্রের খবর এমনটাই। শুধু সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা নয়, রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোরও ঘোষণা করেছেন জহর সরকার।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া চিঠিতে তিনি বলেন, 'আমি গত একমাস ধৈর্য ধরে আর জি কর হাসপাতালের ঘৃণ্য ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া দেখেছি আর ভেবেছি আপনি কেন সেই পুরনো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যে সব শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে তা এক কথায় অতি অল্প এবং অনেক দেরি হয়ে গেছে। সবাই মনে করে রাজ্যে স্বাভাবিক অবস্থা অনেক আগেই ফিরে আসতে পারত যদি দুর্নীতিগ্রস্ত এই ডাক্তারদের চক্র ভেঙে দেওয়ার সময়োচিৎ সিদ্ধান্ত নেওয়া হত, এবং যে উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা এই নক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের তৎক্ষণাৎ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হত'।
তিনি আরও লিখেছেন, 'আমার বিশ্বাস এই আন্দোলনে পথে নামা মানুষরা অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই প্রতিবাদ করছেন। অতএব রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে এই আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা সমীচীন হবে না। অবশ্যই বিরোধী দলগুলি এই আন্দোলন থেকে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে, কিন্তু যে সাধারণ ছাত্রছাত্রী ও মানুষেরা পথেঘাটে দিনের পর দিন প্রতিবাদ করছেন, তাঁরা এই দলগুলিকে ঢুকতে দিচ্ছেন না।' (বানান অপরিবর্তিত)
আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দিল্লি গিয়ে ইস্তফা দেওয়ার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন জহর সরকার। তাঁর ইস্তফা প্রসঙ্গে এখনও দলীয় তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি তৃণমূল। রাজ্য শাসক দলের মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদারের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে যোগাযোগ করে 'এই সময় অনলাইন'। কিন্তু তিনি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেছেন, 'জহর সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। তাঁর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছি না। ওঁর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ অধিকার রয়েছে। আমরা তাঁর কথার সমালোচনা করব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি তাঁর যে শ্রদ্ধা এবং সম্পর্ক তা তিনি ছিন্ন করছেন না।'