• দুর্নীতিতে দোসর হাউস স্টাফরাও! CBI-এর নজরে সন্দীপ-ঘনিষ্ঠরা
    এই সময় | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকতে হাউস স্টাফদের নিয়ে একটি গ্রুপ তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। প্রশাসনিক লবি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নিজের মতো করে হাসপাতাল চালাতে সেখানকার ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক, জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে হাউস স্টাফদের একাংশকে হাত করে নিয়েছিলেন তিনি। এবং এই কাজ করতে গিয়ে একের পর এক সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন সন্দীপ।এমনকী, স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে হাউজ স্টাফ সিলেকশনে যে স্বজনপোষণ হয়েছিল, সেই নথিও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি মেডিক্যাল কলেজে হাউজস্টাফ হিসেবে এক বছরের বেশি কোনও ভাবেই থাকা যায় না। অথচ, ওই হাসপাতালে কেউ কেউ পাঁচ-সাত বছর ধরেও হাউজ স্টাফ হিসেবে রয়ে গিয়েছেন।

    কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা মনে করছেন, দুর্নীতির বিষয় জানাজানি হলে যাতে কেউ তাঁর দিকে আঙুল তুলতে না পারে, সে কারণে এই গ্রুপ তৈরি করেছিলেন সন্দীপ। সাধারণ ভাবে এমবিবিএস পাসের পরে এক বছর ইন্টার্ণশিপ করতে হয়। তার পর মেলে ডাক্তারির স্থায়ী রেজিস্ট্রেশন। এর পর হাউসস্টাফ হওয়া যায়।

    অভিযোগ, চলতি বছরের হাউজ স্টাফের মেরিট লিস্টেও বিস্তর অনিয়ম হয়েছে। তালিকায় যাঁরা প্রথম দিকে ছিলেন, তাঁরা পছন্দের বিষয় নিতে পারেননি। অথচ, পিছনের দিকে থাকা সন্দীপ ঘনিষ্ঠ এমবিবিএস চিকিৎসকরা পছন্দের বিষয় নিয়ে হাউজ স্টাফ হয়ে গিয়েছেন। আরজি কর হাসপাতালে ১২০ জনের হাউজ স্টাফ হওয়ার সিট রয়েছে। কিন্তু, এ বার মাত্র ৮৪ জনের লিস্ট তৈরি হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকে আবার ২০১৭-১৮ সাল থেকে হাউজ স্টাফ হিসেবে খাতায়-কলমে থেকে গিয়েছেন ওখানেই।

    হাউজ স্টাফেরা সরকারি কোষাগার থেকে বেতন পান। চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, পরিষেবা না দিয়ে ওই টাকা একাংশের মদতে আত্মসাৎ করা হয়েছে। ঠিক একই রকম ভাবে সন্দীপ ঘনিষ্ঠ প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ও ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ডাটা এন্ট্রি অপারেটার হয়েও বেশির ভাগ সময়ে সন্দীপের সঙ্গেই থাকতেন।

    সিবিআই সূত্রের খবর, ২০২২ থেকে শুরু করে ২০২৪ পর্যন্ত হাউজ স্টাফ নিয়োগের ক্ষেত্রে যে অনিয়ম হয়েছে, তার সঙ্গে দুর্নীতির প্রাথমিক যোগসূত্র মেলায় সন্দীপকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। এই ঘটনার তদন্তে তলব করা হতে পারে কয়েকজন হাউজ স্টাফকেও।

    স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাউসস্টাফ নিয়োগ হতো কেন্দ্রীয় কাউন্সেলিং মারফত। অভিযোগ, সন্দীপ ঘোষ ও তাঁর সহযোগী স্বাস্থ্য প্রশাসনের একটি গোষ্ঠীর চাপে গত এপ্রিলে সেই নিয়ম বদলে যায়। তার জেরে হাউসস্টাফ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজকে ১৫ নম্বর দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়। অভিযোগ, ওই ১৫ নম্বরের ফাঁক গলে সন্দীপ ঘনিষ্ঠদের হাউস স্টাফ করে দেওয়ার প্রমাণ হাতে এসেছে কেন্দ্রীয় সংস্থার।
  • Link to this news (এই সময়)