এই সময়, আরামবাগ: ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের প্রিসাইডিং অফিসারের ডিউটি পড়েছিল তাঁর। প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে ভোটে প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন—সবই করেছিলেন পুরশুড়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌম্যজিৎ মাইতি। কিন্তু তারপরেও তিনি শো-কজ়ের চিঠি পেয়েছেন। কেন তাঁকে শো-কজ় করা হলো, তা বুঝে উঠতে পারছে না। এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে স্কুলে।সৌম্যজিতের কথায়, লোকসভা ভোটে শিক্ষকদের ডিউটি পড়ে। সেই ডিউটি যদি কোনও শিক্ষক না করেন, তা হলে তাঁকে শো-কজ় করা হয়। কিন্তু সৌম্যজিতের দাবি, তিনি ভোটের ট্রেনিং থেকে শুরু করে সমস্ত ডিউটি করেছিলেন। তা সত্ত্বেও তাঁকে শো-কজ়ের চিঠি দেওয়া হয়েছে। কেন এই শো-কজ়, তিনি তা বুঝতে পারছেন না।
অনেকেই বলছেন, যদি সৌমজিৎ সমস্ত নিয়ম মেনেই ডিউটি করে থাকেন, তা হলে তাঁকে শো-কজ় করা উচিত হয়নি। এতে প্রশাসনের গাফিলতিই প্রমাণিত হচ্ছে বলে কটাক্ষ করেছেন অনেকে। উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরশুড়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে শিক্ষক দিবসের শুভেচ্ছাপত্র পাঠিয়েছিলেন।
এ দিকে, হুগলি জেলা প্রশাসন তাঁকে শো-কজ়ের চিঠি ধরিয়েছে। যা মানতে পারছেন না সৌমজিৎ। স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা বলছেন, সৌম্যজিতের শিক্ষকতা জীবনে কেউ কোনও প্রশ্ন তুলতে পারেননি। তিনি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সব দায়িত্ব পালন করেন। তাই এমন একজনকে শো কজ়ের চিঠি ধরানো হলে, সেটা তাঁর কাছে অপমানের।
সৌম্যজিৎ বলেন, ‘খুবই খারাপ লাগছে। শিক্ষক হিসাবে একদিকে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। অন্য দিকে, ভোটে ডিউটি করা সত্ত্বেও শো-কজ় লেটার ধরানো হলো। দোষ না করেও শো-কজ়ের উত্তর দিতে হলো।’
স্কুলের সহকারী শিক্ষক সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘ভোটের দিন রাতে আরামবাগের কালীপুর কলেজের ডিসিআরসি থেকে বেরোনোর সময় কলেজের গেটের বাইরে স্যরের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি ডিসিআরসি সব জিনিস জমা দেওয়ার জন্য ঢোকেন। বোঝাই যাচ্ছে তিনি ডিউটি করেছেন।’
হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘মনে হচ্ছে কোনও একটা জায়গায় ভুল হচ্ছে। যাঁরা গণতন্ত্রের প্রহরী তাঁদের সঙ্গে এই রকম হওয়া উচিত নয়। আমার কাছে এলে বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে।’