• হামলায় FIR নয়! বিক্ষোভে সাগর দত্তের জুনিয়র ডাক্তাররা
    এই সময় | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • এই সময়, কামারহাটি: কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গত বৃহস্পতিবার কাউন্সিল রুমে বৈঠক চলাকালীন ভাঙচুরের ঘটনার পর কেটে গিয়েছে দু’দিন। সেই ঘটনায় আক্রান্ত এক জুনিয়র চিকিৎসক পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফেও অভিযোগ দায়েরের কথা বলা হয়েছিল।কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, পরে দেখা যায় হাসপাতালের তরফে কোনও অভিযোগ থানায় লিপিবদ্ধই হয়নি। এ নিয়ে শনিবার দিনভর হাসপাতালের অধ্যক্ষের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সন্ধ্যায় জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্সের প্রতিনিধিরা এসে দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলার পর রাতে কামারহাটি থানায় সে দিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযোগ দায়ের করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

    হাসপাতালের অধ্যক্ষ-সহ কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলে এ দিন দুপুর থেকেই সরব হন জুনিয়র চিকিৎসকরা। কলেজ অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধানের ঘরের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে পড়েন তাঁরা। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মুহুর্মুহু স্লোগান উঠতে থাকে। উল্লেখ্য, থ্রেট কালচারের অভিযোগ, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার জুনিয়র ডাক্তাররা কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন।

    অভিযোগ, জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক চলাকালীন আচমকা হামলা চালায় কলেজেরই চিকিৎসক পড়ুয়াদের একটা অংশ। জোর করে তারা বৈঠকের মধ্যে ঢোকার চেষ্টা করলে বাধা দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাতে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। ঘুসি মেরে মিটিং রুমের দরজার কাচ ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাতে আহত হন মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় নামে এক জুনিয়র চিকিৎসক। চোখে আঘাত পান তিনি।

    পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার কামারহাটি থানায় ১৫ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন মনোজিৎ। একই সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষেরও অভিযোগ জানানোর কথা ছিল পুলিশের কাছে। কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ তা করেননি। তা নিয়ে এ দিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁরা অবিলম্বে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে সেদিনের ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে কলেজ ও হস্টেল থেকে সাসপেন্ডের দাবি জানিয়ে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন।

    বিক্ষোভরত মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা আশাহত হয়ে প্রিন্সিপ্যালের ঘরের সামনে বসেছি। সেদিন ওঁর সামনেই ঘটনা ঘটল। অথচ তিনি কোনও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।’ পরে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস ফোরামের প্রতিনিধিরা।

    তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। শেষমেশ তাঁদের মধ্যস্থতায় শনিবার রাতে কলেজের অধ্যক্ষ কামারহাটি থানায় সে দিনের ঘটনার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। রাতে অধ্যক্ষের ঘরের বাইরে থেকে বিক্ষোভ তুলে নেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।

    হাসপাতালের অধ্যক্ষ বলেন, ‘ঘটনার দিনেই আমরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি এফআইআর করতে হবে। সেই মতো এ দিন এফআইআর দায়ের হয়েছে। যে ১৫ জনের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছিল তাদের হস্টেল থেকে আপাতত বহিষ্কার করা হয়েছে।’
  • Link to this news (এই সময়)