এই সময়: এক মৃত্যুতে জীবন ফিরে পেল এক মৃত্যুপথযাত্রী! ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়া শহর কলকাতায় নতুন কিছু নয়। তার পরিবর্তে কোথাও কোথাও নতুন গাছ যে লাগানো হয় না, তেমনও নয়। তবে ঝড়ে উপড়ে পড়া একটি শতবর্ষ প্রাচীন আম গাছকে শত চেষ্টাতেও বাঁচাতে পারেনি ভারতীয় সেনা।তবে তাতে দমে না গিয়ে শহরে একটি উপড়ে পড়া বট গাছকে একই জায়গায় রোপণ করে নবজীবন দান করা হলো। বেহালার সাহাপুর আর্মি ক্যাম্পের ঘটনা। সেনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সবুজায়নকে তাঁরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন। এই উদ্যোগ তাঁরই অংশ।
সেনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ৫ অগস্ট প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে সাহাপুর ক্যাম্পে একটি বিশাল আমগাছ উপড়ে পড়ে। একটি ঘরের উপর পড়ায় তার কাঠামোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে সেনা বিভাগের এই জোনের হেড কোয়ার্টার, ‘ইস্টার্ন কম্যান্ড’ কেটে ফেলার বদলে গাছটিকে বাঁচানোর সব রকম চেষ্টা করে।
পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য, সেনা বিভাগ ‘মিথরি মিট্টি’ সংগঠনের সঙ্গে যৌথ ভাবে গাছটিকে পুনরায় রোপণ করার উপায় খুঁজতে শুরু করে। ১ সেপ্টেম্বর উপড়ে পড়া আম গাছটির ডালপালা ছেঁটে পুনরায় রোপণের কাজও শুরু হয়।
দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার চেষ্টার পরেও শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়। কারণ, শতবর্ষ প্রাচীন গাছটির কাণ্ড মূল থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল। ফলে তাতে নতুন করে পাতা গজানোর আর কোনও সম্ভাবনাই ছিল না। ভারতীয় সেনার নীতি, একটি গাছও কোনও ভাবে নষ্ট করা যাবে না। তাই ওই জায়গায় রোপণ করার জন্য খোঁজ শুরু হয় শহরে উপড়ে পড়া অন্য কোনও গাছের।
অবশেষে, শিয়ালদহ এলাকার সিআইটি রোডে খোঁজ মেলে একটি শতবর্ষ প্রাচীন বট গাছের। ২০ টনের বেশি ওজনের গাছটি উপড়ে রাস্তার ধারে অযত্নে পড়ে ছিল। ‘মিথরি মিট্টি’ সংগঠনের সদস্যেরা গাছটিকে ফের বাঁচানো যাবে বলে নিশ্চিত হন। তার পরেই দু’টি ক্রেন দিয়ে গাছটিকে শিকড়-সহ তুলে একটি বড় ট্রাকে তা সাহাপুর আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের সদস্যেরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যৌথ ভাবে ৩ সেপ্টেম্বর বট গাছটিকে পুনরায় রোপণের জন্য ট্রিটমেন্ট করেন। আম গাছটি যেখানে ছিল, সেই গর্তের মাটি, সার এবং অন্যান্য রাসায়নিক দিয়ে তৈরি করা হয়। ৪ সেপ্টেম্বর রাতে গাছটিকে নতুন করে রোপণ করা হয়। ১৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে সেই অপারেশন। শনিবার সেনার তরফে জানানো হয়েছে। বট গাছটি সুস্থ আছে। এবং তাতে নতুন পাতা গজাতে শুরু করেছে।