• হিন্দু-মুসলিম এক হয়ে কমিটি পরিচালনা, কাঁকিবাজার সর্বজনীনের গণেশ পুজো ঘিরে উন্মাদনা
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: ‘মোরা এক বৃন্তে দু’টি কুসুম হিন্দু-মুসলমান। মুসলিম তার নয়ণ-মণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।’ কবির ভাষায় মানুষের কোনও ধর্ম হয় না। আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্ম আমরা সবাই ‘মানুষ’। আর সেটাই বাস্তবায়িত করে দেখিয়েছে সাঁওতালডিহি থানা এলাকার কাঁকিবাজার সর্বজনীন গণেশ পুজো কমিটি। এখানে হিন্দু-মুসলিম সকলে এক হয়ে পুজো পরিচালনা করে চলেছে। পুজো কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন এলাকার এক মুসলিম যুবক। তারা প্রমাণ করেছে, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। এই বার্তার মধ্য দিয়ে ১৭ বছর ধরে চলে আসা পুজো এখন এলাকার মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। পুজো দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মণ্ডপে ভিড় জমাচ্ছে।

    জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে এলাকার কয়েকজন যুবক গণেশপুজো করার সিদ্ধান্ত নেন। তাতে সর্বপ্রথম আগ্রহ প্রকাশ করেন সামসের আনসারী। কাঁকি বাজারের সাঁওতালডিহি থানা সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় পুজো। সেই থেকে পুজো চলে আসছে। বর্তমানে কাঁকিবাজারের এই পুজো এলাকার সবচেয়ে বড় পুজো হয়ে উঠেছে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁওতালডিহি থানা এলাকায় দু’টি বড় মাপের কারখানা রয়েছে। সেখানে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ কর্মরত। এলাকায় বহু হিন্দিভাষী মানুষের বসবাস। রাত হলেই গণেশ পুজো দেখার জন্য ঢল নামছে। কাঁকিবাজার, কাঁকিবাজার বস্তি, দেউলি, শ্যামপুর, পারবহাল, পাহাড়ীগোড়া প্রভৃতি এলাকার মানুষজন পুজো দেখতে আসেন। বর্তমানে এই পুজো কমিটির সভাপতি সামসের। তিনি বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’। সেটাকে প্রাধান্য দিয়েই আমরা সকলে মিলেমিশে পুজো পরিচালনা করে চলেছি। আমাদের ঈদ, মহরমেও আমার বন্ধুরা শামিল হয়। আমরা চাই মানুষের কাজ করতে।

    পুজো কমিটির সম্পাদক কমলাকান্ত মুখোপাধ্যায়, সহ-সম্পাদক রাজারাম রজক বলেন, পাঁচদিন ধরে আমাদের পুজো চলে। প্রতিদিন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। বিকেলের পর থেকেই ব্যাপক ভিড় হচ্ছে।

    কোষাধ্যক্ষ কাজলবরণ মুখোপাধ্যায়, অশোক বাউরি বলেন, আমরা নিজেরাই চাঁদা আদায় করে পুজো পরিচালনা করি। এলাকার মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সকলের সহযোগিতায় পুজোর পাঁচটা দিন আনন্দের সঙ্গে কাটে। পুজো কমিটির সহ-সভাপতি সুরেশ রজক বলেন, পুজোয় সকলেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। প্যান্ডেলের পাশাপাশি আলোকসজ্জা ও মূর্তিতে এবার বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)