• বিপজ্জনক বাড়ি ছেড়ে দুই মাস ধরে বাস প্রতিবেশীর বারান্দায়
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: মাটির বাড়িতে আগেই জল ঢুকে ভেঙে পড়েছে। বিপজ্জনক বাড়িতে তাই বাস করা আর সাহসে কুলায়নি। তড়িঘড়ি প্রতিবেশীর বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছিলেন। এভাবেই গত দু’মাস ধরে স্বামী পরিবার নিয়ে রাত কাটছে অসহায় বধূর। ভেঙে যাওয়া বাড়ি সারানোর ক্ষমতা নেই সব্জি বিক্রেতা স্বামীর। কাটোয়ার কলসা গ্রামের বধূ সরকারি সাহায্যের আশায় দিন গুনছেন। 

    আগস্ট মাসের প্রথম দিকের অবিরাম বৃষ্টিতে মাটির দোতলা বাড়িতে জল ঢুকেছিল। সেই জল নামলে নতুন সমস্যা দেখা দেয়। গোটা বাড়ি বিপজ্জনক অবস্থায় হেলে রয়েছে। পিছনদিকের জানালা ঝুলছে। যেকোনও সময় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে। তাই আর অপেক্ষা না করে কাটোয়া ১ ব্লকের গীঁধগ্রাম পঞ্চায়েতের কলসা গ্রামের বাসিন্দা সব্জি বিক্রেতা কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় স্ত্রী, বৃদ্ধা মা ও ছেলেকে নিয়ে প্রতিবেশীর বন্ধ বাড়ির বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছেন। সারাদিন সব্জি বিক্রি করে যা আয় হয়, তা দিয়ে বাপ ঠাকুরদার ভিটে সারানোর ক্ষমতা তাঁর নেই। আর প্রতিবেশীর সরু বারান্দাতেই চারজনের কোনওরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই মিলেছে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন তাঁরা অন্যের বাড়ির বারান্দায় অসুরক্ষিত ভাবে থাকবেন! সেই দুশ্চিন্তায় ঘুম আসছে না তাঁদের। গৃহবধূ ঝুমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমার ছেলে অন্যের গাড়ি চালিয়ে কোনওরকমে দু’পয়সা আয় করে। আর শাশুড়ি নমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় নব্বই অতিক্রান্ত। তিনি অসুস্থ। বারান্দায় রান্না খাওয়া করে কীভাবে থাকব? পঞ্চায়েত থেকে ভাঙা বাড়ির ছবি তুলে নিয়ে গিয়েছে। একটা ত্রিপল দিয়ে গিয়েছে। সেটা খাটিয়ে থাকা যায়! কলসা গ্রামের যোগাদ্যা পাড়ায় কার্তিকবাবুর বাড়ি। মেয়ের আগেই বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, বৃষ্টির রাতে বাড়ির নীচের তলায় জল জমে গিয়েছিল। তাই প্রতিবেশী একজনের বাড়ির বারান্দাতেই আমরা জিনিসপত্র নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম। প্রতিবেশীদের একাংশ জানান, ওই পরিবারটি খুবই দুঃস্থ। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। বাড়ি সারানোর মতো সঙ্গতি নেই। তাই এখন পঞ্চায়েতের উপরেই ভরসা। কবে যে তাঁরা বাড়ি পাবেন, তা কারও জানা নেই। 

    গীঁধগ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সনৎ হাজরা বলেন, পঞ্চায়েত থেকে আমরা বাড়ির ছবি তুলে পাঠিয়ে দিয়েছি। ঘরের তালিকা বের হলে ওঁদের নিশ্চয়ই কিছু ব্যবস্থা হবে। আমরা একটি ত্রিপলও দিয়েছি। এর বেশি কিছু আমাদের আর কী-ই বা করার আছে! -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)