• মুর্শিদাবাদে জমে উঠেছে রবিবারের পুজোর বাজার, কেনাকাটায় পুরুষদের টেক্কা মহিলাদের
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: দুপুর তখন ১টা। প্রখর রোদ মাথায় নিয়েই বহরমপুরের খাগড়ার একটি নামী বস্ত্র বিপণির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন সুবর্ণা মণ্ডল। সঙ্গে তাঁর দুই মেয়ে তিথি ও অন্যন্যা। রবিবার ছুটির দিনে হরিহরপাড়া  থেকে বহরমপুরে পুজোর বাজার করতে এসেছিলেন। তিনি জানালেন, শেষের দিকে তেমন কালেকশন তেমন পাওয়া যায় না। তাই একমাস বাকি থাকতেই বাড়ির সকলের জন্য জামা কাপড় কিনতে এসেছি। সন্ধ্যা ও রাতের দিকে আন্দোলনের জেরে শহরের পথঘাট অনেক সময় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে। তাই সকাল সকালই বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। পুজো তো চলেই এল। 

    শুধু সুবর্ণাদেবী নন, তাঁদের মতো অনেকেই রবিবার পুজোর বাজার করতে হাজির হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহর বহরমপুরে। বিকেলের পর ডোমকল, কান্দি, বেলডাঙা, রঘুনাথগঞ্জ, ধুলিয়ান, জিয়াগঞ্জ ও লালবাগ শহরের দোকানগুলিতেও এদিন থেকে ভালোই বিক্রি শুরু হয়েছে। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ভিড়ই বেশি ছিল বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। 

    বহরমপুরের নামী শপিং মল থেকে ছোট বড় মাঝারি দোকানে বিকেলের পর থেকে মহিলাদের ভিড় বাড়তে থাকে। বিশেষ করে নামকরা কিছু শাড়ির দোকানে এদিন সন্ধ্যায় প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। প্রত্যেকেই সেরা কালেকশন নিজেদের আলমারি কিংবা ওয়ার্ডরোবে রাখার জন্য যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। মুর্শিদাবাদ সিল্ক থেকে সাউথ ইন্ডিয়ান সিল্ক, কাঁথা স্টিচ, বেনারসি, কাঞ্জিভরমের নতুন নতুন ডিজাইনের শাড়ি নিয়ে হাজির নামকরা বস্ত্র বিপণিগুলিও। সেইসব কালেকশন দেখে কিনতে সন্ধ্যা থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ল মানুষ। 

    মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, মুর্শিদাবাদ জেলায় সাধারণত এক মাস আগে থেকেই পুজোর বাজার শুরু হয়। রবিবার ছুটির দিনে বাজারে ভালোই ভিড় হয়েছে। এখানকার ছোট, বড় মাঝারি ব্যবসায়ীরা এই পুজোর আবহাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। এবার বিক্রি ভালোই হবে বলে আমরা আশা করছি। দিন যত এগিয়ে আসবে তত বাজারে ভিড় বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।

    বহরমপুরের এক বস্ত্র ব্যবসায়ী রজত দাস বলেন, শনিবার ভালো বৃষ্টি হয়েছে। রবিবার আবহাওয়া কেমন হবে সেই আশঙ্কায় ছিলাম। তবে এদিন রৌদ্র ঝলমলে আকাশে মানুষ খুশির মেজাজে বাজারে এসেছে। এখনও একমাস বাকি আছে। পুজোর আগে দেবীর আগমনের যে খুশির আবহ সেটা ধীরে ধীরে উপলব্ধ হচ্ছে। এবার বাজার জমবে। 

    কান্দির বাসিন্দা অন্নপূর্ণা রায়চৌধুরী বলেন, গত সপ্তাহ থেকে ধীরে ধীরে পুজোর কেনাকাটা শুরু করেছি। আমাদের বড় পরিবার একটু হাতে সময় নিয়ে কেনাকাটা না করলে শেষে খুব তাড়াহুড়ো হয়ে যায়। তাই রবিবার সকাল সকাল বাজারে এসেছি। 

    বহরমপুরের জজ কোর্ট মোড় এলাকার বাসিন্দা টুম্পা অধিকারী বলেন, সন্ধ্যায় শহরের রাস্তায় বেশ ভিড় হয়। অন্যান্য মহকুমা থেকে বহরমপুরে অনেকেই বাজার করতে আসেন। তাই এদিন দুপুরের খাবার খেয়েই বিকেলে বেরিয়ে পড়লাম। কিছু দোকান ও কয়েকটি শপিংমল ঘুরে জিনিস কিনব। 

    হরিহরপাড়ার সুবর্ণাদেবী বলেন, দুই মেয়ে বায়না ধরেছে নতুন চুড়িদার ও কুর্তি কিনবে। তাই ওদের নিয়ে এসেছিলাম। ফিটিংয়ে একটু সময়ও তো লাগে। এদিন একই সঙ্গে পরিবারের সকলের জন্য পুজোর বাজার করে নিলাম।
  • Link to this news (বর্তমান)