• বাঘমুণ্ডির ৬ গ্রামে ডায়ারিয়ার প্রকোপ, মৃত ১, আক্রান্ত শতাধিক
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: বাঘমুণ্ডিতে ডায়ারিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ছ’টিরও বেশি গ্রামে ডায়ারিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক। ইতিমধ্যে একজনের মৃত্যুর খবরও পাওয়া গিয়েছে। ওই মহিলার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তাঁর শুধুমাত্র ডায়ারিয়াতেই মৃত্যু হয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না স্বাস্থ্যদপ্তর। একাধিক গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তর গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে বলে দাবি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঘমুণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েত ও বুড়দা কালিমাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ছ’টি গ্রামে ডায়ারিয়ার প্রকোপ দেখা গিয়েছে। বাঘমুণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের একরা ও টিকরটাঁড় গ্রামে গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে মানুষজন পেটের সমস্যায় ভুগছেন। বেশ কয়েকজনকে পাথরডি ব্লক হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। বুড়দা কালিমাটি গ্রামপঞ্চায়েতের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের পারামটিকর, কালিমাটি, সারজুমাথু এবং মাউনিয়া গ্রামে ডায়ারিয়ার প্রকোপ দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে পারামটিকর গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মীমণি মাছুয়ারকে গত শুক্রবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পাথরডি ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর আত্মীয় মনসারাম মাছুয়ার বলেন, বাড়ির কয়েকজন আগেই ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল। তাদের সেবার কাজ লক্ষ্মীমণি করেছিল। সে নিজেও ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়লে শুক্রবার তাকে ভর্তি করা হয়। ডায়ারিয়াতেই শনিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। গ্রামে আরও বেশ কয়েকজন অসুস্থ রয়েছেন। 

    স্থানীয় বাসিন্দা গোলক কুমার বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় চারটি গ্রামের মানুষজন ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত। আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে আতঙ্কিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। রবিবার মেডিক্যাল টিম ওষুধপত্র দেওয়া শুরু করেছে। অন্যান্য বিষয়ও খতিয়ে দেখেছে।

    বাঘমুণ্ডি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মানস মেহেতা বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে কেউ কেউ হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরেছেন। ইতিমধ্যে একটি মেডিক্যাল মোবাইল ভ্যান চালু করা হয়েছে। সেখানে ওষুধপত্র দেওয়া থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকছে। পানীয় জল থেকেই সমস্যা হয়েছে। গ্রামগুলিতে পরিস্রুত পানীয় জল পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাছাড়া যে জায়গাগুলি থেকে রোগ ছড়াচ্ছে, তা ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা গিয়েছে। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, পাথরডি ব্লক হাসপাতালে ডায়ারিয়া আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তবে তা শুধুমাত্র ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার জন্যই হয়েছে কি না সে বিষয়ে জেলায় একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। গ্রামগুলির উপর স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মীরা নজর রেখেছেন। মেডিক্যাল টিম যাওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মীরাও একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেওয়া হয়েছে। কিছু গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। এখনই আতঙ্কিত হওয়ার মতো কোনও বিষয় নেই। শুধুমাত্র স্বাস্থ্যদপ্তরের একার পক্ষে পুরো বিষয়টি দেখা সম্ভব নয়। প্রশাসনিক আধিকারিকদের পাশাপাশি জেলা পরিষদেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)