• বহরমপুরে চারদিন পর ভাগীরথী থেকে উদ্ধার নিখোঁজ নার্সের দেহ
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বহরমপুর: চারদিন পর ভাগীরথী নদী থেকে উদ্ধার হল নিখোঁজ নার্সের দেহ। শনিবার রাতে বহরমপুর থানার বালিধাবড়া ঘাট থেকে নার্সের দেহ উদ্ধার করে বহরমপুর থানার পুলিস। দেহ উদ্ধার হতেই যুবতী নার্সের মৃত্যু রহস্য আরও ঘনীভূত হল। মৃতের মা বলেন, আমি মিসিং ডায়েরি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ আমাকে দিয়ে অপহরণের মামলা রুজু করিয়েছে। আমি জানতাম না। কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। আমার মেয়ের মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটন হোক, এটাই চাই। মৃত নার্সের নাম সুচিত্রা মণ্ডল (২৩)। বাড়ি বহরমপুর থানার কোদলা। বহরমপুর থানার তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, মৃত্যুর কারণ এখনও আমাদের কাছে অস্পষ্ট। সবদিক থেকেই তদন্ত চলছে।   

    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সুচিত্রা বছর দুয়েক আগে বহরমপুরের এক নার্সিংহোমে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। বহরমপুর স্বর্ণময়ী বাজার এলাকায় একটি মেস ভাড়া করে থাকতেন। সপ্তাহে এক বা দু’দিন বাড়ি যেতেন।

    গত বুধবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মাকে শেষ ফোন করে জানান, তিনি ডিউটি সেরে মেসে ফিরছেন। পরদিন বহরমপুর থানা থেকে মৃতের পরিবারকে ডেকে পাঠানো হয়। গত বুধবার রাতেই ভাগীরথী ব্রিজ থেকে তাঁকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিতে দেখেন এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবক। তিনিই থানার কন্ট্রোল রুমে ফোন করে জানান বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্রিজ থেকে একজোড়া জুতো উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরদিন মৃতের মা সোনালি মণ্ডল মেয়ের জুতো শনাক্ত করেন। সুচিত্রা গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানানো হয়। সোনালিদেবী বলেন, মেয়ে আমাকে ফোনে জানাল সে মেসে ঢুকছে। ব্রিজে কীভাবে গেল? কেউ ডেকে নিয়ে গিয়েছিল কি না, তাও জানি না।

    এরপরই বহরমপুর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন মৃতের পরিবার। এদিন সোনালিদেবী জানান, মেয়েকে কেউ কোনওদিন ভয় দেখাত বা কাউকে ও ভালোবাসত কি না, তিনি তা জানতেন না। মৃতের বাবা মহারাজ মণ্ডল কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকেন। মেয়ের মৃত্যু সংবাদ শুনে ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন, মেয়েকে আর ফিরে পাব না। কিন্তু এই ঘটনার কিনারা হোক চাই। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১০টা নাগাদ ভাগীরথী নদীর উপর রামেন্দ্রসুন্দর সেতু থেকে ঝাঁপ দেন সুচিত্রা। 

    এই মৃত্যু রহস্য নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। ব্রিজের উপর থেকে মিলেছে তাঁর এক জোড়া জুতো। আত্মঘাতী হলে জুতো খুলতে যাবেন কেন? তবে কি কেউ তাঁকে নদীতে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে? স্বর্ণময়ী থেকে প্রায় চার কিমি দূরে ব্রিজে কীভাবে পৌঁছলেন তিনি? তাঁকে ঝাঁপ দিতে দেখা যুবকই বা কে? নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কেন কিডন্যাপ কেস করাতে গেল? ব্রিজের উপর থাকা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত করছে পুলিস। তবে নার্সের মৃত্যু রহস্য এখনও ধোঁয়াশায় ঢাকা রয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)