• এই প্রথম মেট্রোর থার্ড লাইনে বদল, বসছে ইস্পাতের বদলে অ্যালুমিনিয়াম
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: দীর্ঘ ৪০ বছর পর কলকাতা মেট্রোর নর্থ-সাউথ করিডরে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী থার্ড লাইনের কিছুটা অংশ বদল করা হল। কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর রুটে চার দশকের পুরনো ইস্পাতের থার্ড লাইন বদলে অ্যালুমিনিয়াম করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। শনিবার রাতে যাত্রী পরিষেবা শেষে গিরিশ পার্ক সাইডিংয়ে ২০০ মিটার দীর্ঘ থার্ড লাইন অ্যালুমিনিয়ামে রূপান্তর করা হয়। কাজ শেষ করতে রবিবার প্রায় ভোর হয়ে যায়। ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মী মিলিয়ে প্রায় ৫০ জনের বিশেষ দল সাফল্যের সঙ্গে এই কাজটি করেছে। এবার ময়দান সাইডিংয়ে ইস্পাতের থার্ড লাইন পরিবর্তনের কাজে হাত দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, লন্ডন, মস্কো, বার্লিন সহ বিশ্বের সেরা মেট্রো রেলগুলিতে অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল বসানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অ্যালুমিনিয়ামের লাইনে মেট্রোর গতি আরও মসৃণ হবে। মেট্রো রেকের চাকার কাছে হাতের মতো একটি অংশ বেরিয়ে থাকে। সেটি থার্ড লাইনের সংস্পর্শে এলেই বিদ্যুৎ সংযোগ হয় রেকে। একে বলা হয় থার্ড রেল কারেন্ট কালেক্টর (টিআরসিসি)। থার্ড লাইনের সঙ্গে টিআরসিসি’র ঘর্ষণে বাড়তি তাপ উৎপন্ন হয়। এতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎও খরচ হয়। অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড লাইনে বিদ্যুৎ খরচ তুলনায় অনেকটাই কম হবে। পাশাপাশি কার্বণ নিষ্ক্রমণের হার অপেক্ষাকৃত কমবে। একইসঙ্গে সহজে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হওয়ায় ভোল্টেজের ওঠানামাও হ্রাস পাবে। যা মেট্রোর সার্বিক গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই যাত্রাপথের থার্ড লাইন পুরোটা অ্যালুমিনিয়ামের করতে হলে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

    মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, গোটা পথে নতুন থার্ড লাইন বসানো হলে বিদ্যুতের ব্যবহার ৮৪ শতাংশ কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে কিলোমিটার পিছু বছরে ১ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। অর্থাৎ অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল নর্থ-সাউথ করিডরে বসে গেলে প্রতি বছর ৩২ কোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ খরচ বেঁচে যাবে। মেরামতির খাতে ইস্পাতের তুলনায় অ্যালুমিনিয়ামের থার্ড রেল অনেক বেশি সুবিধার বলে ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি। থার্ড রেলে কোনও সমস্যা হলে ইস্পাতের লাইন তুলে তা মেরামত করার পর পুনরায় তা ওয়েলডিং করা বাধ্যতামূলক। অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রে ওয়েলডিংয়ের দরকার পড়বে না। দু’টি রেল কাছাকাছি এনে স্প্লাইস জয়েন্টের মাধ্যমে জুড়ে দেওয়া যাবে।
  • Link to this news (বর্তমান)