• কালনার বাড়িতে ফিরে শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসলেন বাংলার ‘জলকন্যা’ সায়নী দাস
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কালনা: উত্তর আয়ারল্যান্ডের নর্থ চ্যানেল জয় করে বাড়ি ফিরতেই শুভেচ্ছা আর অভিনন্দনে ভাসলেন বাংলার জলকন্যা সায়নী দাস। নর্থ চ্যানেল জয়ের ফলে সপ্তসিন্ধুর মধ্যে পঞ্চমসিন্ধু জয় করে অনন্য নজির গড়েছেন কালনার মেয়ে। রবিবার শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনে ভেসে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা জানান সায়নী। তিনি জানান, ৯-১০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রচণ্ড ঠাণ্ডা জলে সাঁতার কাটতে হয়েছে। জেলিফিসে আক্রান্ত হয়ে শরীরে জ্বালা-যন্ত্রণা করতে থাকে। তাও তিনি সব বাধা অতিক্রিম করে এগিয়ে যেতে থাকেন। টাচ পয়েন্টের তিন কিলোমিটার আগে হঠাৎ উল্টো স্রোতে পড়তে হয় তাঁকে। একদিকে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা। অন্যদিকে উল্টো স্রোতে ওই পথ পেরোতে ৩ঘণ্টা সময় লেগে যায়। সায়নী তাঁর অবজারভার ও পাইলট সহ আয়াল্যান্ডবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তাঁরা কোনও স্বার্থ ছাড়া বহু ক্ষেত্রে তাঁকে নানাভাবে সাহায্য করে গেছেন। এদিন তিনি আরজি কর কাণ্ড নিয়ে বলেন, আমি মহিলা ক্রীড়াবিদ হিসাবে দোষীর উপযুক্ত শাস্তি চাই। বাংলায় নারীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বাবা রাধেশ্যাম দাস বলেন, আমি মেয়ের সাফল্যে গর্বিত, বিদেশের মাটিতে বারবার জয়ের পতাকা তুলে ধরতে পেরেছে। কালনার ক্রীড়া অনুরাগী সুশীল মিশ্র বলেন, সায়নী দেশের গর্ব। কঠোর অধ্যাবসায় ওঁকে আগামী দিনে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে। 

    প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ইংলিশ চ্যানেল জয় করেন সায়নী। ২০১৮ অষ্ট্রেলিয়ার রটনেস্ট চ্যানেল জয়। ২০১৯ আমেরিকার ক্যাটালিনা জয়। ২০২২ সালে এশিয়ার প্রথম মহিলা সাতারু হিসেবে আমেরিকার হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মলোকাই চ্যানেল জয় করেন। চলতি বছর এপ্রিল মাসে নিউজিল্যান্ডের কুক প্রণালী জয় করে সাড়া ফেলে দেন সায়নী। পরবর্তী লক্ষ্য ছিল উত্তর আয়ারল্যান্ডের নর্থ চ্যানেল। সেই লক্ষ্যে শুরু করেন প্রস্তুতি ও কঠোর অনুশীলন। নর্থ চ্যানেলের ঠাণ্ডা জলে সাঁতার কাটার জন্য আইস বাথ নিয়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কালনায় ভাগীরথীর জলে চলে ধারাবাহিক অনুশীলন। আর্থিক সমস্যা থাকলেও বেশ কয়েকজন হিতাকাঙ্খী পাশে এসে দাঁড়ান। আগস্টের শেষে নর্থ চ্যানেলে জলে নামার ছাড়পত্র পান সায়নী। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রথম সপ্তাহে বাবা রাধেশ্যাম দাস ও মা রুপালিদেবীকে সঙ্গে নিয়ে পাড়ি দেন আয়ারল্যান্ডে। ৩০ আগস্ট সায়নী নর্থ চ্যানেল জয়ে জলে নামেন। ৩৮ কিলোমিটার চ্যানেল ১৩ ঘণ্টা ২২মিনিট সময়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছান। ক্লান্ত অবসন্ন শরীরে দেশের পতাকা তুলে ধরেন বিদেশের মাটিতে। শনিবার রাত পৌনে ১১টা নাগাদ কালনার বাড়িতে পৌছান সায়নী সহ তাঁর বাবা-মা। সায়নীর আগামী লক্ষ্য স্পেনের জিব্রালটা প্রণালী।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)