• পদোন্নতির টোপ, সহবাসের প্রস্তাব মহিলা পুলিসকে! অভিযোগ পুলিস সুপারের কাছে
    বর্তমান | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: পুলিস আইনের রক্ষক। কিন্তু সেই পুলিসই হয়ে উঠল ‘ভক্ষক’— এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনলেন এক মহিলা সহকর্মী! আর এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে পুলিসমহলে। অভিযোগ, মহিলা কনস্টেবলকে হোটেলে বা বাইরে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে রাত কাটানোর ‘অফার’ দিতেন অফিসাররা! তা মেনে নিলেই তাঁর পদোন্নতি হয়ে যাবে বলেও ‘টোপ’ দেওয়া হতো। কিন্তু তাতে ‘না’ করায় তাঁকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা হয় বলে মহিলা কনস্টেবলের দাবি। অবশেষে, তাঁকে পুলিস লাইনে ক্লোজ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিসের শীর্ষদপ্তরে অভিযোগ জানিয়েছেন অসহায় মহিলা পুলিস কর্মী।

    বারাসতের বাসিন্দা রাইমা (নাম পরিবর্তিত) ২০১৫ সালে রাজ্য পুলিসের কনস্টেবল হিসেবে চাকরি পান। তাঁর প্রথম পোস্টিং ছিল বারাসত থানায়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি সেখানে চাকরি করেছেন। সেই সময় এক পুলিসের সাব-ইনসপেক্টর তাঁকে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার অফার দেন। কিন্তু রাজি না হওয়ায় ‘প্রভাবশালী’ অফিসারের কোপের মুখে পড়তে হয় রাইমাকে। শুধু তাই নয়, রাতে যে কোনও অভিযোগের স্পেশাল তদন্তে গেলে প্রভাবশালী অফিসার কেবল তাঁকেই নিয়ে যেতেন বলে অভিযোগ উঠছে। পরে ওই অফিসার বদলি হয়ে যান। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে পোস্টিং দেওয়া হয় মধ্যমগ্রাম থানায়। রাইমার অভিযোগ, বারাসাত থানায় থাকাকালীন কুপ্রস্তাব দিতেন ওই অফিসার। মধ্যমগ্রামে এলেও তাতে লাগাম পড়েনি। আমাকে কখনও দিঘা বেড়াতে যাওয়ার, আবার কখনওবা হোটেলে গিয়ে তাঁর সঙ্গে রাত কাটানোর অফার দেওয়া হতো। শুধু তাই নয়, তাঁদের সঙ্গে সহবাসের অফার মেনে নিলে প্রমোশনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও আমাকে বারবার টোপ দেওয়া হতো। ওই অফিসার ছাড়াও মধ্যমগ্রাম থানার দুই এসআই এবং এক এএসআই আমাকে একই ধরনের কুপ্রস্তাব দেন। ওঁদের জ্বালায় আমি এখন অসহায়। বিভিন্ন অছিলায় আমি এই প্রস্তাব এড়িয়েছি। তাই আমাকে বিভিন্ন ডিউটি দিয়ে হেনস্তা করা হচ্ছিল। রাইমার আরও অভিযোগ, আমি এনিয়ে জেলা পুলিস ও ভবানী ভবনে অভিযোগ জানিয়েছি। আর তার জেরেই আমাকে ক্লোজ করে পুলিস লাইনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলছেন, আমার পরিবারের সুখ্যাতি রয়েছে। আমার অপরাধ পুলিসের চাকরি করা! আমার সহকর্মীদের কাছে আমাকে এভাবে কুপ্রস্তাব পেতে হবে ভাবিনি। পুলিস আইনের রক্ষক। কিন্তু এখন দেখছি আমার সহকর্মীরাই কার্যত ভক্ষক! 

    এনিয়ে বারাসত পুলিস জেলার পুলিস সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া বলেন, ওই মহিলা কনস্টেবল সঠিকভাবে ডিউটি না করায় ক্লোজ করা হয়েছে। কনস্টেবলের অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আমি সিনিয়র কোনও অফিসার দিয়ে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
  • Link to this news (বর্তমান)