• ময়নাতদন্তে কয়েক জনের ‘অনধিকার’ উপস্থিতি? দেহ ঘিরে কোন প্রভাবশালীরা, অনুসন্ধানে সিবিআই
    আনন্দবাজার | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক-ছাত্রীর খুন, ধর্ষণের পরে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগের সঙ্গে কারা জড়িয়ে, তা বোঝাটা তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে সিবিআই সূত্রের দাবি। এর পিছনে প্রভাবশালীর যোগের বিষয়টা যাচাই করা চলছে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি করা হচ্ছে।

    তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, আর জি করের আর্থিক দুর্নীতির কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের এ বিষয়ে কী ভূমিকা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ৯ অগস্ট সকাল থেকে সন্দীপ এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ চিকিৎসকদের মোবাইল ফোনের বিভিন্ন নথি ইত্যাদি এই তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার বলে তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সন্দীপের ডান হাত, বাঁ হাত বলে পরিচিত অনেক চিকিৎসকই সেই দিন ইমার্জেন্সি বিল্ডিংয়ের চার তলায় সেমিনার কক্ষের আশপাশে অনেক ক্ষণ ছিলেন। তাঁদের কে বা কারা ফোন করে ডেকেছিলেন বা কোথাও থাকার দায়িত্ব দিয়েছিলেন কি না, তদন্তকারীরা তার খোঁজখবর করছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। মৃতদেহের আশপাশে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক তথ্যপ্রমাণের বিষয়ে অভিজ্ঞ আর জি করের দুই কর্তাস্থানীয় চিকিৎসকের ওই দিন সেমিনার রুমের কাছাকাছি একদম মাটি কামড়ে পড়ে থাকার বিষয়টিও তদন্তকারীদের সূত্রে উঠে আসছে। তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, মেডিক্যাল কাউন্সিলের কয়েক জন সদস্য, অন্য সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, এবং কয়েক জন আইনজীবীও অপরাধের পরের দিন আর জি করের ঘটনাস্থলের আশপাশে ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতির কী কারণ? কেউ কি তাঁদের কোনও নির্দেশ দিয়েছিল? এই সব প্রশ্নের জবাব খোঁজাও তদন্তের অঙ্গ বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি।

    কে কাকে কখন ফোন করে ডাকলেন, এর পরে তাঁরা ফের কাকে বা কাদের ডাকলেন—সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি। তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, ময়না তদন্তের সময়েও কয়েক জন ডাক্তার কেন সেখানে ছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এর জবাব অনেক সংশয়ের উত্তর দিতে পারে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের একাংশ মনে করছেন।

    তদন্তকারীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, ৯ অগস্ট এক দল চিকিৎসক, যাঁদের কেউ কেউ তৎকালীন অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, ঘটনাস্থলের কাছেপিঠে ছিলেন। এ ছাড়া রাজনৈতিক মহল এবং প্রশাসনিক ও পুলিশ মহলের অংশ, এমন কেউ কেউও সেখানে থাকতে পারেন। কোনও এক পুলিশকর্তার পরোক্ষ ভাবে অতিসক্রিয়তার কিছু প্রমাণ মিলেছে, দাবি তদন্তকারীদের সূত্রে। এই সব আলাদা আলাদা গোষ্ঠীর ভূমিকা খতিয়ে দেখা তদন্তের বিচার্য দিক বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। সিবিআইয়ের এক কর্তা বলেন, “মৃতদেহ এবং ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ এবং ময়না তদন্তে কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কার ইন্ধনে এমনটা ঘটল, তা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
  • Link to this news (আনন্দবাজার)