এই সময়, শিলিগুড়ি: তাঁর বিরুদ্ধে ‘উত্তরবঙ্গ লবি’ চালানোর অভিযোগ উঠেছে আগেই। এ বার রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কর্তা জলপাইগুড়ির সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে কোভিড কালের হোটেল বিল আটকে রাখার অভিযোগও উঠল। শিলিগুড়ির হোটেল মালিকদের একাংশ এই ব্যাপারে অভিযোগ তুলেছেন।তাঁদের অভিযোগ, ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের সময়ে কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসকদের শিলিগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকার নানা হোটেলে রাত্রিবাসের ব্যবস্থা করা হয়। হোটেলে চিকিৎসকদের রাত্রিবাসের বিলের একাংশ মেটানো হলেও এখনও অন্তত সাড়ে তিন কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা মেটানো হচ্ছে না।
কোভিডের সময়ে সুশান্ত রায় উত্তরবঙ্গে স্বাস্থ্য দপ্তরের ওএসডি পদে ছিলেন। কোভিড চিকিৎসা সংক্রান্ত স্বাস্থ্য দপ্তরের যাবতীয় সিদ্ধান্ত তিনিই নিতেন। বকেয়া মেটানো নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের গড়িমসিতে বিরক্ত হোটেল মালিকেরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তার আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও চিঠি দিয়ে সমস্ত ঘটনা জানান তাঁরা। আদালতের রায় হোটেল মালিকদের পক্ষে গেলেও স্বাস্থ্য দপ্তর তাতে কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ।
আরজি কর-এর ঘটনায় যখন স্বাস্থ্য দপ্তরে উত্তরবঙ্গ লবির ‘দাদাগিরি’ নিয়ে সরব নানা মহল, তখন হোটেল মালিকেরাও বকেয়া টাকার দাবিতে ফের সরব হয়েছেন। শিলিগুড়ি হোটেল মালিক সমিতির সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘যখন সুশান্ত রায় দায়িত্বে ছিলেন তখন তিনি দিচ্ছি, দেব বলে ঘুরিয়েছেন। এখন স্বাস্থ্য দপ্তর বলছে, ওই টাকা আমরা দিতে পারব না। আদালতের রায়কেও অগ্রাহ্য করছে স্বাস্থ্য দপ্তর।’
এই ব্যাপারে সুশান্ত রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। হোয়াটস অ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর উত্তর মেলেনি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘কোভিড কালে বহু দুর্নীতি হয়েছে। এখন সবই সামনে আসবে।’
কোভিডের সময়ে স্বাস্থ্য দপ্তর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, মাটিগাড়া এবং কাওয়াখালির দুটি বেসরকারি হাসপাতালকে করোনার চিকিৎসা কেন্দ্রে পরিণত করে। যোগাযোগের সুবিধের জন্য শিবমন্দিরের এই হোটেলটিই ছিল বেশির ভাগ চিকিৎসকের রাত্রিবাসের ঠিকানা।
এক হোটেল মালিক বলেন, ‘চিকিৎসকদের রাত্রিবাস বাবদ আমার হোটেলের মোট বকেয়া বিল ছিল প্রায় ২ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। মাঝে ৫০ লক্ষ টাকা স্বাস্থ্য দপ্তর দেয়। এখনও ১ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা বাকি। কোনও হোটেলের পক্ষে সম্ভব এত টাকা বকেয়া ফেলে রাখা?’