এক পুরুষ নার্স অভিযোগ করেছিলেন, একদিন সকালে তিনি যখন পোশাক বদল করছিলেন, তখন এক ভারতীয় ডাক্তার আচমকা তাঁর চেম্বারে ঢুকে পড়েন এবং তাঁর নিতম্বে পর পর বেশ কয়েকটি চাপড় মারেন। পরে ওই নার্সের গোপনাঙ্গেও হাত দিতে যান ওই ডাক্তার। তখন ওই নার্স বাধা দেন-- তখনও তিনি পোশাক বদলের কাজটির মাঝামাঝি ছিলেন-- এবং দ্রুত ট্রাউজার্স পরে নেন। তবে তিনি ব্য়াপারটি ছেড়ে দেন না। তিনি এ নিয়ে অভিযোগ জানান।
বিষয়টি কোর্টে উঠেছিল এবং আত্মপক্ষ সমর্থনে ড. ঘোষ বলেছিলেন, ব্যাপারটা একটা মিস-আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছাড়া কিছু নয়। তিনি আসলে ব্যথা নিরাময়ের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ব্যায়াম ডেমনস্ট্রেট করে দেখাচ্ছিলেন। কী ভাবে সেটা করতে হবে, সেটা দেখাতে গিয়েই তিনি কোনও ভাবে ওই নার্সের নিতম্ব স্পর্শ করে ফেলেন।
ওদেশে যাই হোক, এদেশেও সন্দীপের কীর্তির পাহাড়। এর পরই আরজি করের কাণ্ড। আর কান টানলে মাথা আসার মতো করে সন্দীপের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ওঠে। আর্থিক তছরুপের অভিযোগ উঠেছে আগেই। সেই সব তদন্তের সূত্রেই 'সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন' বা সিবিআই কোর্টকে জানিয়েছে, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ অ্য়ান্ড হসপিটালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. সন্দীপ ঘোষ নাকি আরজি করের রিক্রুটমেন্ট পদ্ধতিটাকেও নিয়ন্ত্রণ করতেন! যে কাজ আসলে করার কথা সরকারের, মানে, স্বাস্থ্যভবনের আধিকারিকদের, সেই কাজটিই নিজের ক্ষমতায় করতেন আরজি কর কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত সন্দীপ। কোনও প্যানেল ধরে নিয়োগ হত না সন্দীপের আমলে। পুরোটাই তাঁর ইচ্ছেমতো হত। তিনি নিজের মতো করে পছন্দের স্টাফদের ইন্টারভিউতে ডাকতেন। ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে সন্দীপ দীর্ঘ দিন ধরে পুরোপুরি নিজের পছন্দের হাউস স্টাফদেরই নিয়োগ করতেন আরজি করে। তাঁর বন্ধুবান্ধবদের হাসপাতাল-সংক্রান্ত নানা কনট্র্যাক্টও পাইয়ে দিতেন।
কাছের মানুষকে পাইয়ে দেবার নীতিতেই কাজ করে গিয়েছেন সন্দীপ। নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেননি, সততার ধার ধারেননি। যা ইচ্ছে তাই করে গিয়েছেন। আর এই করতে-করতেই সিবিআইয়ের অভিযোগ, সন্দীপের এই স্বেচ্ছাচারিতার হাত ধরেই আরজি করকে কেন্দ্র করে একটা ক্রিমিনাল নেক্সাস তৈরি হয়ে গিয়েছিল। যে আঁতাঁত আসলে দীর্ঘদিন ধরে সরকারের স্বার্থের পরিপন্থী হয়ে পড়েছিল। তা রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্ষতিই ঘটাচ্ছিল। ক্ষতি হচ্ছিল আরজি করেরও।