‘ডাক্তারবাবুরা মিথ্যে বলছেন’, বিনা চিকিৎসায় ছেলের মৃত্যুতে ‘বিচারের’ দাবি মায়ের
প্রতিদিন | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সুমন করাতি, হুগলি: ডাক্তারবাবুর মিথ্যা কথা বলছেন, আর এখন তাকেও মিথ্যাবাদী প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে। ছেলের বিনা চিকিৎসাতেই মৃত্যু হয়েছে, এমনটাই দাবি করে সরব হলেন কোন্নগরে মৃত যুবকের মা কবিতাদেবী। পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য ‘সঠিক’ বলে জানিয়ে বিচারের দাবি তুললেন তিনি।
কোন্নগরের বাসিন্দা বিক্রম ভট্টাচার্য ২৮ বছরের তরতাজা যুবকের মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায়, অভিযোগ উঠেছিল এমনই। বিক্রমের মৃত্যুর পর সেই ঘটনায় এক্স হ্যান্ডেলে বার্তা দেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে চিকিৎসকদের কাজে ফেরার আবেদন জানান তিনি। যদিও পালটা বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করে অভিষেককে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয় চিকিৎসকদের তরফে। এহেন পরিস্থিতিতেই এবার মুখ খুললেন বিক্রমের মা কবিতা দেবী। সন্তানহারা মায়ের দাবি, “ডাক্তার বাবুরা যদি বলেন বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়নি, তাহলে তারা সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা বলছেন। সেদিন হাসপাতালে যারা ছিলেন আহত ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তাদের কাছে বার বার অনুরোধ করি, ডাক্তার কোথায়? কিন্তু কেউ কিছুই জানায়নি। আমি আমার ছেলেকে নিয়ে প্রায় তিন ঘন্টা নিয়ে ছোটাছুটি করেছি। কিন্তু কোথাও ডাক্তার নেই, না ট্রমা কেয়ারে ছিল, না আউটডোরে। এখন ডাক্তার বাবুরা মিথ্যা কথা বলছেন। তারা চিকিৎসা করেননি যার জেরে আমার ছেলেকে হারিয়েছি। আর এখন আমাকেও মিথ্যাবাদী বানাচ্ছেন।”
একইসঙ্গে কবিতাদেবী বলেন, “গরীব মানুষরা সরকারি হাসপাতালে যায়। আমিও আশা নিয়ে গিয়েছিলাম যে আরজিকর ভালো। সেখানে আমার ছেলেটা চিকিৎসা পাবে। সুস্থ হবে। কিন্তু আমার সে আশা পূর্ণ হয়নি। আমার ছেলেটা ওখানে চিকিৎসাই পেল না। শেষে মারা গেল। আমি শুধু হাসপাতালে একবার এদিক, একবার ওদিক ছুটে বেড়ালাম। এতটুকু মায়া লাগলো না ডাক্তারবাবুদের? এদের মধ্যে কোনও মায়া-দয়া নেই। এরা কেমন ডাক্তার? একটা ২৮ বছরের ছেলে যন্ত্রণায় কষ্ট পেয়ে বিনা চিকিৎসায় মারা গেল, আর ডাক্তারবাবুরা বলছেন বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কথাটা ঠিক নয়। আমি একজন মা আমাকেও তারা মিথ্যাবাদী বানাচ্ছে।”
এদিকে বিক্রমের বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর ঘটনায় বিচার চেয়ে দাবি উঠেছে জাস্টিস ফর কোন্নগর। রবিবার রাতে নাগরিক সমাজের ডাকে কয়েক হাজার মানুষ প্রথমে মোমবাতি ও ফোনের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে মানব বন্ধন করে পথে নামেন। পাশাপাশি রাতে কয়েক হাজার মানুষ বিক্রমের মৃত্যুর বিচার চেয়ে মশাল মিছিল করে রাস্তায় নামেন। ছেলের মৃত্যুর বিচার চেয়ে রাস্তায় নামেন সন্তানহারা মা কবিতা দেবীও।