আশা রেখেও পথেই থাকবেন, সুপ্রিম শুনানির পর প্রতিক্রিয়া নির্যাতিতার পরিবারের
প্রতিদিন | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
অর্ণব দাস, বারাকপুর: বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন ছেড়ে আসা নয়, আশাহত হওয়াও নয়। সুপ্রিম কোর্টে আর জি করে ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ড মামলার শুনানির পর এমনই বলছেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্য। ভরসা রাখছেন দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ের উপর। আশা রাখছেন, মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়ার অন্যায়ের সুবিচার একদিন পাবেনই। সোমবার শীর্ষ আদালতে আর জি কর কাণ্ডের শুনানিতে আরও একবার সিবিআইয়ের কাছ থেকে তদন্ত রিপোর্ট চেয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। তা নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে নারাজ নির্যাতিতার মা, কাকিমা। তবে চিকিৎসকদের কাজে যোগ দেওয়া নিয়ে সুপ্রিম-সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁদের স্পষ্ট মত, নিরাপত্তা না হলে কীভাবে কাজ করবে?
‘যতদিন না বিচার পাব, ততদিন পথেই থাকব’, রবিবার কলকাতার সভামঞ্চ থেকে এমনই দৃঢ় স্বর শোনা গিয়েছিল নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের কাকিমার গলায়। তিনি স্লোগান বদলে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ”We want Justice নয়। এবার স্লোগান হোক We demand Justice. বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা আন্দোলনের রাস্তায় ছাড়বেন না।” আর সোমবার শীর্ষ আদালতের শুনানির পর নির্যাতিতার মায়ের বক্তব্য, মানুষের আন্দোলন প্রতিহত করতে চাইলেও মা-বাবার আন্দোলন কেউ প্রতিহত করতে পারবে না। বললেন, “সুপ্রিম কোর্টে যাই হোক না কেন, আমরা আশা ছাড়িনি। আমরা পথে নেমেছি। যতদিন না বিচার পাব, পথেই থাকব। মানুষের আন্দোলন প্রতিহত করতে চাইলেও আমাদের আন্দোলন পারবেন না। বাবা-মা হিসাবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
মৃতের পরিবারকে সেসময় টাকা ‘অফার’ বিষয়টি এই মুহূর্তে যেমন স্পর্শকাতর, তেমনই বিতর্কিত। এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজে সোমবার জানিয়েছেন, টাকা নয়। তাঁদের বলা হয়েছিল, মেয়ের স্মৃতিতে যদি কোনও কাজ করতে চান, তাহলে আর্থিকভাবে রাজ্য সরকার সাহায্য করবে। তা নিয়ে নির্যাতিতার মা বললেন, ”উনি (মুখ্যমন্ত্রী) আমাদের বলেছিলেন, মেয়ের জন্য তো কিছু পাবেন, সেটা দিয়ে মেয়ের স্মৃতির জন্য কিছু বানিয়ে রাখবেন। আমরা বলেছিলাম, তখনই টাকা নেব, যখন মেয়ে বিচার পাবে, দোষীরা সাজা পাবে। আমরা নিজে গিয়ে আপনার দপ্তর থেকে নিয়ে আসব।”
সামনেই দুর্গাপুজো। মুখ্যমন্ত্রী সকলের উদ্দেশে বলছেন, পুজোয় ফিরুন। কিন্তু কীভাবে ফেরা হবে? যে বাড়িতে দুর্গাপুজোর মূল দায়িত্বে থাকত মেয়ে, সেখানে তাঁর এমন করুণ পরিণতি। এ বাড়িতে শুধু পুজো কেন, কোনওদিন কোনও উৎসবেই আর আলো জ্বলবে না। এ কথা বলতে দিয়ে কেঁদে ফেললেন মা। আসলে আদালতের সওয়াল-জবাব, পথের প্রতিবাদ ? সব পেরিয়ে এখন তাঁদের নিত্যসঙ্গী এই চোখের জলই। দোষীর চরমতম সাজা হলে হয়ত চিত্রটা বদলে যাবে। কিন্তু কবে? এই প্রশ্নের উত্তর সময়ের গর্ভে।