• কুলটির কারখানার লোহা চুরি করেই বিপুল সম্পত্তির মালিক মাফিয়া ‘গেহনা’, শোরগোল
    বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কুলটি: কুলটির অবৈধ লোহা সিন্ডিকেটের কারণেই কি প্রাণ হারাতে হল বিকি রবিদাসকে? সিআইএসএফের মারে যুবকের মৃত্যুর পর শিল্পাঞ্চলে এটাই এখন বড় প্রশ্ন। সেইলের অধীনে রয়েছে শিল্পাঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন কুলটির এই কারখানা। স্টিল ফাউন্ড্রি, ফেব্রিকেশন, কাস্টিংয়ের কাজ বহুকাল ধরে হচ্ছে। কারখানাজুড়ে মজুত বিপুল পরিমাণ লোহা লুট করেই এলাকায় ‘গেহনা’ নামে পরিচিত এক লোহা মাফিয়া ফুলেফেঁপে উঠছে।

    সূত্রের খবর, স্থানীয় ও বাইরের যুবকদের দিয়ে লোহা চুরি করিয়ে তা গেহনার অবৈধ লোহার কাঁটায় পাঠানো হচ্ছে। টাকার লোভে গরিব মানুষ একাজে রাজি হয়ে যাচ্ছে। কেন্দুয়া বাজার সহ কুলটির একাধিক জায়গায় লোহার কাঁটা রয়েছে। সেখানে লোহা গলিয়ে নানাভাবে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। সবকিছু ‘সেটিং’ করেই এই সিন্ডিকেট চলে। অভিযোগ, চাকরি বাঁচাতে কখনও কখনও ছিঁচকে চোর ধরে বীরত্ব দেখায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে থাকা সিআইএসএফ। গেহনার মতো লোকের গায়ে হাত পড়ে না। দীর্ঘদিন এই কারবার চললেও পুলিসের নজরেও কেন তা পড়ল না-সেই প্রশ্নও উঠেছে।

    কুলটিতে কান পাতলেই শোনা যায়, একসময়ে বিহার থেকে অ্যালুমিনিয়ামের বাসন ফেরি করতে আসা গেহনার উল্কার গতিতে উত্থানের কাহিনী। রূপনারায়ণপুর, দেন্দুয়া থেকে সালানপুর, বরাকর, কুলটিতে লোহা সাম্রাজ্যের বেতাজ বাদশা সে।

    কুলটির এই কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে কাস্টিং লোহার কাজ, স্টিল ফাউন্ড্রি, ফেব্রিকেশনের কাজ হওয়ায় প্রচুর বাতিল লোহার সামগ্রী জমা হতে থাকে। কখনও দিনের পর দিন জমা থেকে সেসব মাটি চাপা পড়ে যায়। কখনও বাতিল লোহা স্তূপাকারে জমা থাকে। এখন কারখানা পুরোমাত্রায় চালু রয়েছে। প্রচুর লোহার কাজ হয়। সেইসঙ্গে এখানে তামার প্রচুর সামগ্রী রয়েছে। সেসব লুট করছে মাফিয়ারা। কুলটির কয়লা মাফিয়াদের একাংশ আবার হার্ডওয়্যার ব্যবসায় নাম লিখিয়েছে। চোরাই লোহা রডের কারখানায় দিয়ে সেখান থেকে রড নিয়ে এসে ব্যবসা করছে।

    গেহনা প্রায় ২০ বছর আগে ছিঁচকে লোহা চুরি করে হাত পাকায়। এরপর প্রথমে বাম সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ও পালাবদলের পর তৃণমূলের একাংশকে ম্যানেজ করে কারবার চলতে থাকে। এখন তার অগাধ সম্পত্তি। চোরাই লোহা গলানোর জন্য ওয়ার্কশপ বানিয়ে ফেলেছে। কুলটির বিজেপি বিধায়ক অজয় পোদ্দার বলেন, লোহার সিন্ডিকেট তো চল঩ছেই। সেইসঙ্গে এখানকার ম্যানেজমেন্ট লোহার অকশন করে তামা পাচার করে দিয়েছে। লোহার দাম ৪০ টাকা কেজি। সেখানে তামার দাম ২০০ টাকা কেজি। কিন্তু কেন্দ্রের অধীনে থাকা সংস্থায় কেন এই অনিয়ম? এনিয়ে বিজেপি বিধায়ক বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজশ করে এসব করছে। আমি সেইলের শীর্ষস্তরে বিষয়টি জানিয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)