• বিহু সংস্কৃতি থেকে আলপনার বিবর্তন, চা বলয়ে পাচার রোধের থিমে সাজছে মণ্ডপ
    বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: কোথাও অসমের ঐতিহ্যবাহী বিহু নাচের সংস্কৃতি। কোথাও আবার ডুয়ার্সের চা বলয়ে নারী ও শিশু পাচার রোধে বার্তা। কোথাও তুলে ধরা হচ্ছে আলপনার বিবর্তন। আবার কোথাও ফেলে দেওয়া টায়ারের কারুকার্য। হরেক থিমে সেজে উঠছে তিস্তাপাড়ের শহর জলপাইগুড়ির পুজো। যত দিন এগিয়ে আসছে, বাড়ছে শিল্পীদের ব্যস্ততা। রাত জেগে চলছে কাজ। প্রতিটি পুজো কমিটি শহরবাসীকে সেরা পুজো উপহার দিতে মরিয়া। 

    শহরের মুহুরিপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো সমিতির এবারের আকর্ষণ অসমের লোকসংস্কৃতি। ৭৫ বছরের পুজোয় তারা তুলে ধরতে চাইছে বিহু নাচের ঐতিহ্য। ‘এক টুকরো অসম’ মণ্ডপে তুলে আনতে একমাস ধরে কাজ করে চলেছেন তিনসুকিয়ার শিল্পীরা। মণ্ডপজুড়ে বাঁশের কারুকার্য। তৈরি হচ্ছে বিশাল আকারের জাপি (বাঁশের টুপি), জাকোই (মাছ ধরার সরঞ্জাম) সহ খালোই, সেপা, খুকা, দিংরা এবং বিহু নাচের বাদ্যযন্ত্র পেপা। রং তুলিতে মণ্ডপে অসমের সংস্কৃতি ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পী রবীন বর। 

    পিছিয়ে নেই বামনপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি। ৭৪ বছরের পুজোয় তাদের থিম ‘চাই না হতে উমা।’ নারী ও শিশুপাচার রোধে বার্তা দিতে এমন থিম বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তিনটি ধাপে মণ্ডপ হচ্ছে। প্রথম ধাপে দেখা যাবে, কীভাবে শিশুরা পাচারের শিকার হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে মহিলাদের পাচার হয়ে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হচ্ছে। তৃতীয় ধাপে থাকছে চমক। সেখানে দেখা যাবে, কীভাবে মা দুর্গা অন্ধকারের পথে হারিয়ে যেতে বসা মহিলা ও শিশুদের রক্ষা করছেন? নদীয়ার শিল্পীরা মণ্ডপ বানাচ্ছেন। কৃষ্ণনগর থেকে আসছে একশোরও বেশি মাটির মডেল। 

    ৯৬ বছরের পুজোয় আলপনার বিবর্তন তুলে ধরছে পান্ডাপাড়া সর্বজনীন পুজো কমিটি। একশো বছর আগে কীভাবে আলপনা দেওয়া হতো, সেই আলপনার কীভাবে ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে, তুলে ধরা হচ্ছে মণ্ডপে। তবে থিমের চমক রং তুলিতে আঁকা নয়, কাপড়, ফোম, জরি দিয়ে শিল্পীরা ফুটিয়ে তুলেছেন আলপনার নকশা। 

    ফি বছর জলপাইগুড়ি শহরবাসীর নজর কাড়ে দিশারী ক্লাবের পুজো। ৬১ তম বর্ষে তাদের থিম ‘আদিশক্তি’। থিম নিয়ে সবটা না জানালেও উদ্যোক্তারা বলছেন, ফেলে দেওয়া টায়ার, টিউব দিয়ে হচ্ছে মণ্ডপসজ্জা। রাস্তার পাশে অনেক সময় বাতিল টায়ার, টিউব পড়ে থাকে। তাতে বৃষ্টির জল জমে জন্ম হয় ডেঙ্গুর মশার। এনিয়ে উদ্যোক্তারা সচেতন করতে চাইছেন। বোঝাতে চাইছেন, টায়ার, টিউব ফেলে না দিয়ে তা কাজে লাগানো যেতে পারে।  জলপাইগুড়ি মুহুরিপাড়া সর্বজনীনের প্যান্ডেলের কাজ চলছে। - নিজস্ব চিত্র। 
  • Link to this news (বর্তমান)