• বয়সের ভারে চোখ ঝাপসা হলেও প্রাণ পায় বাসন্তীর হাতেগড়া প্রতিমা
    বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ধূপগুড়ি: আগামী মাসে এ সময় দুর্গাপুজো। দেবীর আগমন ঘিরে ঘুম উবে গিয়েছে ধূপগুড়ির ঠাকুরপাঠের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সি বাসন্তী পালের। নাওয়াখাওয়া ভুলে অন্য মৃৎশিল্পীদের মতো বাসন্তীও ব্যস্ত দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে। বৃদ্ধ বাসন্তীর হাতেই এলাকার কয়েকটি মণ্ডপে এবং বাড়ির পুজোয় দেবীমূর্তি প্রাণ পায়। বয়সের ভারে চোখে ঝাপসা দেখেন, কিন্তু প্রতিমায় নিখুঁত রঙের প্রলেপ দেন তিনি। তাই কারখানার সবক’টি প্রতিমায় চক্ষুদান করেন তিনিই। 

    ঠাকুরপাঠ বাজারের পাশেই নিতাই পালের কারখানা। সেখানে এবার বড় মাপের ২৮টি দুর্গাপ্রতিমা তৈরি হচ্ছে।‌ সমস্ত প্রতিমারই তদারকি করছেন বাসন্তী। কিন্তু, এই বয়সে এসে এত দায়িত্ব কেন? ছেলে নিতাই পালের সাফ কথা, মা প্রতিমার তদারকি না করলে দেবী দুর্গার অবয়ব ফুটে ওঠে না। 

    বাসন্তী পালের আদি বাড়ি ছিল বাংলাদেশের সিলেটে। স্বামী আর শ্বশুর মিলে ওপার বাংলায় জমিদার বাড়িতে প্রতিমা গড়তেন।‌ বেশ চলছিল দিনগুলি, কিন্তু সুখ বেশিদিন টিকল না। স্বামীর হাত ধরে এপার বাংলায় চলে আসেন। তারপর দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠে ধূপগুড়ির ঠাকুরপাঠ এলাকায় ঠাঁই। 

    এদিকে এসে ছোট প্রতিমা তৈরি করে কোনওরকম সংসার চলে পাল পরিবারের। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি ক্লাবের কাছে কাকুতিমিনতি করে খুব কম টাকায় প্রতিমা বানিয়ে দেন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ঠাকুরপাঠ এলাকায় পুজো কমিটির সঙ্গে জড়িত উত্তম রায়, তপন রায় প্রমুখ বলেন, বাসন্তী পালের হাতে গড়া প্রতিমা যেন কথা বলে।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)