• অ্যাকশন নিতে চাই না, আলোচনায় বসুন, ডাক মমতার
    বর্তমান | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কড়া নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে কাজে যোগ দিতেই হবে আন্দোলনকারী ডাক্তারদের। সেই নির্দেশ সামনে আসার পরেই সোমবার নবান্ন সভাঘরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ জানালেন, ‘আমি এখনও কারও বিরুদ্ধে কোনও অ্যাকশন বা ব্যবস্থা নিতে চাই না। সঙ্গত কারণেই চাই আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক। আপনারা কাজে যোগ দিন। আপনারা যে যে দাবি জানিয়েছিলেন, তার মধ্যে বেশ কয়েকটি পূরণ হয়েছে। তারপরও আপনাদের যদি কিছু বলার থাকে, তাহলে ইউ অল আর অলওয়েজ ওয়েলকাম।’ 

    তবে শুধু কাজে ফেরার আর্জি নয়, চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মমতা। ঘোষণা করেছেন, সব হাসপাতালে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা, নিরাপত্তারক্ষী, মহিলা ও পুরুষ চিকিৎসকদের জন্য পৃথক রেস্টরুম ইত্যাদির জন্য রাজ্যের তরফে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে এই সমস্ত কাজ দ্রুত শেষ করতেও বলা হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বৈঠকও ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে অন্যদের পাশাপাশি তিনি আমন্ত্রণ জানাতে বলেছেন জুনিয়র ডাক্তারদেরও।

    নবান্ন সূত্রে খবর, এদিন রাজ্যের হাসপাতালগুলির সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেলে ডিজি রাজীব কুমার জানান, ‘আমরা চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। এব্যাপারে চিকিৎসকদের মতামতও চাইছি।’ এখানেই শেষ নয়, সাংবাদিক সম্মেলন করে মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানান মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও। তাঁর কথায়, ‘আমরা এখনই নেতিবাচক কিছু ভাবছি না। আমরা ভীষণভাবে আশাবাদী যে, মানুষকে পরিষেবা দিতে তাঁরাও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ফলে ভ্রাতৃপ্রতিম জুনিয়র চিকিৎসকরা আজ কাজে ফিরবেন বলেই ধরে নিচ্ছি।’ স্বাস্থ্যসচিবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই অচলাবস্থার জন্য ইতিমধ্যে আউটডোর পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন সাত লক্ষ মানুষ। ইনডোর পরিষেবা পাননি ৭০ হাজার মানুষ। সাত হাজার অপারেশন আটকে গিয়েছে। ক্যাথল্যাবের পরিষেবা থেকে বঞ্চিতের সংখ্যা সাত হাজার। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের।

    সরকারি হাসপাতালে অচলাবস্থার কারণে কর্পোরেট ব্যবসা বৃদ্ধি নিয়ে এদিন ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মমতা। টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করায় সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কেউ আমার বন্ধু নয়, শত্রুও নয়। ফলে দ্রুততার সঙ্গে চিকিৎসকদের জন্য রেস্টরুম তৈরি করার জন্যই আর জি করে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। প্রমাণ লোপাটের জন্য নয়। মৃতের পরিবারকেও কোনও টাকা দেওয়ার কথা হয়নি। আর কলকাতার সিপি বিনীত গোয়েল সাত দিন আগে পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। সামনেই দুর্গাপুজো, আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারটাও তো রয়েছে। তাই সেই আর্জি মেনে নেওয়া হয়নি।’
  • Link to this news (বর্তমান)